Tuesday, April 3, 2012

মিথ্যার প্রচলিত আকার-প্রকৃতি-২


السلام عليكم

দৈনন্দিন পথনির্দেশিকা

মিথ্যার প্রচলিত আকার-প্রকৃতি-

 

অসত্য মেডিকেল সার্টিফিকেট
পরিতাপের বিষয়বর্তমান যুগে মিথ্যার ব্যাপকতা এতোই প্রকট আকার ধারণ করেছে যেযারা হারাম-হালালজায়েয-নাজায়েয এবং শরীয়তের ওপর চলতে চেষ্টা করেন তারাও এ নিকৃষ্ট ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে পড়েছেন। তাদের অবস্থা দেখে মনে হয়মিথ্যার বহু আকার-ধরনকে তারা মিথ্যার আওতা-বহির্ভূত করে রেখেছেন।
অথচ সে মিথ্যাকাজ করে দ্বিগুণ গোনাহ উপার্জন করছে। প্রথমতমিথ্যা বলার গোনাহদ্বিতীয়তগোনাহকে গোনাহ মনে না করার গোনাহ।
একবার এক ব্যক্তিযিনি অত্যন্ত নেককারনামায রোযার পাবন্দ ছিলেনযিকির-আযকারেও লিপ্ত থাকতেনবুযুর্গদের সহবতেও থাকতেন। তিনি দেশের বাইরে থাকতেন। তিনি একবার দেশে এলেন এবং আমার সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেন। আমি জিজ্ঞেস করলামআপনি কখন কর্মস্থলে ফিরে যাচ্ছেনউত্তরে তিনি বললেন ০৮/১০ দিন পর ফিরে যাওয়ার ইচ্ছা রাখি। আমার ছুটিও শেষ হয়ে গিয়েছে। তবে আমি গতকালই অতিরিক্ত ছুটির জন্য একটি মেডিকেল সার্টিফিকেট পাঠিয়ে দিয়েছি।

দ্বীন কি শুধু নামায রোযার নাম ?
মেডিকেল সার্টিফিকেট প্রেরণের কথাটি এমনভাবে তিনি বললেন যেন এটা কোনো ব্যাপারই নয়। এটা বরং খুবই সাধারণ বিষয়। তার মধ্যে চিন্তিত হওয়ার নুন্যতম লক্ষণটিও প্রকাশ পেতে দেখলাম না। আমি তাকে জিজ্ঞেস করলামআপনি কীভাবে মেডিকেল সার্টিফিকেট পাঠালেন। উত্তরে বললেনঅতিরিক্ত ছুটি আদায়ের জন্য প্রেরণ করেছি। যদি এমনিই ছুটি চাইতাম তাহলে ছুটি মিলত না। এ সার্টিফিকটের কল্যাণে আমি ছুটি পেয়ে যাব। আমি পুনরায় প্রশ্ন করলামআপনি মেডিকেল সার্টিফিকেটে কি লিখেছেনউত্তরে তিনি বললেনতাতে লেখা আছেআমি এতটুকু অসুস্থ যে এ অবস্থায় আমার পক্ষে ভ্রমণ করা সম্ভব নয়। আমি বললামজনাব! দ্বীন কি শুধু নামায রোযার নামযিকিরে মশগুল থাকার নামআপনার তো বুযুর্গদের সাথে সুসম্পর্কও রয়েছে। এতদসত্ত্বেও কি করে এ মেডিকেল সার্টিফিকেট পাঠালেনঅথচ আপনি তো সুস্থ ব্যক্তি।
তিনি তৎক্ষণাৎ পরিস্কারভাবে বলে দিলেনআজই প্রথম আমি আপনার মুখ থেকে এ ধরনের কথা শুনলামএও একটি মিথ্যা কাজআমি বললামজনাব! তাহলে আর মিথ্যা কাকে বলেউনি জিজ্ঞেস করলেনতাহলে অতিরিক্ত ছুটি কিভাবে নেবআমি বললাম আপনার যতদিন ছুটি একান্ত প্রয়োজন ততদিন ছুটি নেবেন। অতিরিক্ত প্রয়োজন হলে বিনা বেতনে ছুটি গ্রহণ করুনতাহলে তো আপনাকে এ মিথ্যা সার্টিফিকেট প্রদানের প্রয়োজন পড়ে না।
আজকাল মানুষ মনে করেমিথ্যা মেডিকেল সার্টিফিকেট পাঠানো মিথ্যার অন্তর্ভুক্ত নয়আর দ্বীন তো শুধু নামায রোযাযিকির-আযকারের নাম। জীবনের অন্যান্য ক্ষেত্রে অহরহ মিথ্যা বলার দিকে কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই।

মিথ্যা সুপারিশ
একজন বিজ্ঞজ্ঞানী ও বুযুর্গ ব্যক্তির একটি সুপারিশ-নামা আমার নিকট আসল। আমি তখন জেদ্দায় অবস্থান করছিলাম। পত্রে তিনি লিখেছেনপত্রবাহক ওমুক দেশের নাগরিক। তবে তিনি আপনার দেশে যেতে চান। অতএব আপনি দূতাবাসে একটি সুপারিশ লিখে দেনতাকে যেন আপনার দেশের একটি পাসপোর্ট প্রদান করা হয়এ সূত্রে যে তিনি আপনার দেশেরই নাগরিক এবং তার পাসপোর্ট হারিয়ে গিয়েছে। এ মর্মে আপনার দেশের দূতাবাসে একটি দরখাস্তও জমা দেয়া আছে। অতএবআপনি তার সুপারিশটি করে দেবেন।
পাঠকবৃন্দ! আপনারাই বলুন : ওখানে উমরা পালন হচ্ছেহজ্জ আদায় হচ্ছেতাওয়াফ ও সায়ী হচ্ছেসে দেশে অবস্থান করা সত্ত্বেও এধরনের মিথ্যা ও ধোঁকাবাজির আশ্রয় নেওয়া হচ্ছে। মনে হয় যেন এসব ব্যাপার তাদের কাছে দ্বীনের কোনো অংশই না। আসল ব্যাপার হল দ্বীনের সাথে মুসলিমদের সম্পর্ক খুবই ক্ষীণ হয়ে পড়েছে।
মানুষ এটা ধারণা করে নিয়েছে যেইচ্ছাকৃতভাবে মিথ্যাকে মিথ্যা মনে করে বললেই কেবল মিথ্যা হবে। আর ডাক্তারের কাছ থেকে মিথ্যা মেডিকেল সার্টিফিকেট বানিয়ে নেওয়ামিথ্যা সুপারিশনামা লিখিয়ে নেয়া অথবা মিথ্যা মামলা দায়ের করাএগুলো যেন কোনো মিথ্যাই নয়। অথচ আল্লাহ তাআলা বলেন :
مَا يَلْفِظُ مِنْ قَوْلٍ إِلَّا لَدَيْهِ رَقِيبٌ عَتِيدٌ
(সে যে কথাই উচ্চারণ করেতার কাছে সদা উপস্থিত সংরক্ষণকারী রয়েছে।) [সূরা কাফ : ১৮]
অর্থাৎ তোমাদের মুখ থেকে যা কিছু উচ্চারিত হয় তা তোমাদের আমলনামায় রেকর্ড করা হচ্ছে। 

মূলঃশামসুল হুদা আযীযুল হক
Collected From: http://www.islamhouse.com/


be Organized by Holy Islam 

O.H.I 

For More Visit: