Sunday, August 28, 2011

রমাদান ম্যানুয়েল-২৭: লাইলাতুল কদর ও কিছু প্রশ্ন


السلام عليكم

রমাদান ম্যানুয়েল-২: লাইলাতুল কদর ও কিছু প্রশ্ন


প্রশ্ন:লাইলাতুল কদরের মর্যাদা, বৈশিষ্ট্য ও ফযীলাত জানতে চাই।
(
১) এ রাতে আল্লাহ তাআলা পুরা কুরআন কারীমকে লাউহে মাহফুয থেকে প্রথম আসমানে নাযিল করেন। তাছাড়া অন্য আরেকটি মত আছে যে, এ রাতেই কুরআন নাযিল শুরু হয়। পরবর্তী ২৩ বছরে বিভিন্ন সূরা বা সূরার অংশবিশেষ বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ঘটনা ও অবস্থার প্রেক্ষিতে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামর উপর অবতীর্ণ হয়।
(
২) এ এক রজনীর ইবাদত হাজার মাসের ইবাদতের চেয়েও উত্তম।
(
৩) এ রাতে পৃথিবীতে অসংখ্য ফেরেশতা নেমে আসে এবং তারা তখন দুনিয়ার কল্যাণ, বরকত ও রহমাত বর্ষণ করতে থাকে।
(
৪) এটা শান্তি বর্ষণের রাত। এ রাতে ইবাদত গুজার বান্দাদেরকে ফেরেশতারা জাহান্নামের আযাব থেকে মুক্তির বাণী শুনায়।
(
৫) এ রাতের ফাযীলত বর্ণনা করে এ রাতেই একটি পূর্ণাঙ্গ সূরা নাযিল হয়। যার নাম সূরা কদর।
(
৬) এ রাতে নফল সালাত আদায় করলে মুমিনদের অতীতের সগীরা গুনাহগুলো মাফ করে দেয়া হয়।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
যে ব্যক্তি ঈমান ও সাওয়াব লাভের আশায় কদরের রাতে নফল সালাত আদায় ও রাত জেগে ইবাদত করবে আল্লাহ তার ইতোপূর্বের সকল সগীরা (ছোট) গুনাহ ক্ষমা করেদেন। (বুখারী)
প্রশ্ন: কোন রাতটি লাইলাতুল কদর?
উত্তর : এ প্রশ্নের উত্তর স্বরূপ হাদীসে নিুবর্ণিত বাণী রয়েছে :
[
১] এ রাতটি রমযান মাসে। আর এ রাতের ফযীলত কিয়ামত পর্যন্ত জারী থাকবে।
[
২] এ রাতটি রমাযানের শেষ দশকে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন :
 রমাযানের শেষ দশদিনে তোমরা কদরের রাত তালাশ কর।” (বুখারী)
[৩] আর এটি রমযানের বেজোড় রাতে হওয়ার সম্ভাবনা বেশী। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন :
 তোমরা রমাযানের শেষ ১০ দিনের বেজোড় রাতগুলোতে কদরের রাত খোঁজ কর।” (বুখারী)
[৪] এ রাত রমযানের শেষ সাত দিনে হওয়ার সম্ভাবনা বেশী। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন :
 যে ব্যক্তি লাইলাতুল কদর (কদরের রাত) অন্বেষণ করতে চায়, সে যেন রমাযানের শেষ সাত রাতের মধ্য তা অন্বেষণ করে।

[৫] রমাযানের ২৭ শে রজনী লাইলাতুল কদর হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশী।
ক. হাদীসে আছে :
 উবাই ইবনে কাব সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে বর্ণিত হাদীসে এসেছে, তিনি বলেন যে, আল্লাহর শপথ করে বলছি, আমি যতদূর জানি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে যে রজনীকে কদরের রাত হিসেবে কিয়ামুল্লাইল করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন তা হল রমাযানের ২৭ তম রাত। (মুসলিম)
(খ) আব্দুল্লাহ বিন উমার থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন :
 যে ব্যক্তি কদরের রাত অর্জন করতে ইচ্ছুক, সে যেন তা রমাযানের ২৭শে রজনীতে অনুসন্ধান করে। (আহমাদ)
[৬] কদরের রাত হওয়ার ব্যাপারে সম্ভাবনার দিক থেকে পরবর্তী দ্বিতীয় সম্ভাবনা হল ২৫ তারিখ, তৃতীয় হল ২৯ তারিখে। চতুর্থ হল ২১ তারিখ। পঞ্চম হল ২৩ তারিখের রজনী।
[৭] সর্বশেষ আরেকটি মত হল- মহিমান্বিত এ রজনীটি স্থানান্তরশীল। অর্থাৎ প্রতি বৎসর একই তারিখে বা একই রজনীতে তা হয় না এবং শুধুমাত্র ২৭ তারিখেই এ রাতটি আসবে তা নির্ধারিত নয়। আল্লাহর হিকমত ও তাঁর ইচ্ছায় কোন বছর তা ২৫ তারিখে, কোন বছর ২৩ তারিখে, কোন বছর ২১ তারিখে, আবার কোন বছর ২৯ তারিখেও হয়ে থাকে।
প্রশ্ন: কেন এ রাতকে অস্পষ্ট করে গোপন রাখা হয়েছে। এটা স্পষ্ট করে নির্দিষ্ট করে বলা হয় নি কেন?
উত্তর : এ রাতের পুরস্কার লাভের আশায় কে কত বেশী সক্রিয় অগ্রণী ভূমিকা পালন করে এবং কত বেশী সচেষ্ট হয়, আর কে নাফরমান ও আলসে ঘুমিয়ে রাত কাটায় সম্ভবতঃ এটা পরখ করার জন্যই আল্লাহ তাআলা এ রাতকে গোপন ও অস্পষ্ট করে রেখেছেন।
প্রশ্ন : যে রাতটি লাইলাতুল কদর হবে সেটি বুঝার কি কোন আলামত আছে?

উত্তর : হাঁ, সে রাতের কিছু আলামত হাদীসে বর্ণিত আছে। সেগুলো হল :

(১) রাতটি গভীর অন্ধকারে ছেয়ে যাবে না।
(
২) নাতিশীতোষ্ণ হবে। অর্থাৎ গরম বা শীতের তীব্রতা থাকবে না।
(
৩) মৃদুমন্দ বাতাস প্রবাহিত হতে থাকবে।
(
৪) সে রাতে ইবাদত করে মানুষ অপেক্ষাকৃত অধিক তৃপ্তিবোধ করবে।
(
৫) কোন ঈমানদার ব্যক্তিকে আল্লাহ স্বপ্নে হয়তো তা জানিয়েও দিতে পারেন।
(
৬) ঐ রাতে বৃষ্টি বর্ষণ হতে পারে।
(
৭) সকালে হালকা আলোকরশ্মিসহ সূর্যোদয় হবে। যা হবে পূর্ণিমার চাঁদের মত।
(সহীহ ইবনু খুযাইমাহ- ২১৯০, বুখারী০ ২০২১, মুসলিম- ৭৬২ নং হাদীস)
প্রশ্ন: রমাযানের শেষ দশ রাতে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কী ধরণের ইবাদত করতেন?
উত্তর : তাঁর ইবাদতের অবস্থা ছিল নিম্নরূপ :
১. প্রথম ২০ রাত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পূর্ণ রাত জাগরণ করতেন না। কিছু সময় ইবাদত করতেন, আর কিছু অংশ ঘুমিয়ে কাটাতেন। কিন্তু রমাযানের শেষ দশ রাতে তিনি বিছানায় একেবারেই যেতেন না। রাতের পুরো অংশটাই ইবাদত করে কাটাতেন।
সে সময় তিনি কুরআন তিলাওয়াত, সলাত আদায় সদাকা প্রদান, যিকর, দু, আত্মসমালোচনা ও তাওবাহ করে কাটাতেন। আল্লাহর রহমাতের আশা ও তার গজবের ভয়ভীতি নিয়ে সম্পূর্ণ খুশুখুজু ও বিনম্রচিত্তে ইবাদতে মশগুল থাকতেন।
২. হাদীসে এসেছে সে সময় তিনি শক্ত করে তার লুঙ্গি দ্বারা কোমর বেধে নিতেন। এর অর্থ হল, রাতগুলোতে। তাঁর সমস্ত শ্রম শুধু ইবাদতের মধ্যেই নিমগ্ন ছিল। নিজে যেমন অনিদ্রায় কাটাতেন তাঁর স্ত্রীদেরকেও তখন জাগিয়ে দিতেন ইবাদত করার জন্য।
৩. কদরের রাতের ইবাদতের সুযোগ যাতে হাতছাড়া হয়ে না যায় সেজন্য রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শেষ দশদিনের পুরো সময়টাতে ইতেকাফরত থাকতেন। (মুসলিম- ১১৬৭)
প্রশ্ন: মহিমান্বিত লাইলাতুল কদরে আমরা কী কী ইবাদত করতে পারি?
উত্তর : রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যেভাবে এ রাত কাটাতেন এর পূর্ণ অনুসরণ করাই হবে আমাদের প্রধান টার্গেট। এ লক্ষ্যে আমাদের নিুবর্ণিত কাজগুলো করা আবশ্যক :
(ক) নিজে রাত জেগে ইবাদত করা এবং নিজের অধীনস্ত ও অন্যান্যদেরকেও জাগিয়ে ইবাদতে উদ্বুদ্ধ করা।
(
খ) লম্বা সময় নিয়ে তারাবীহ ও তাহাজ্জুদ পড়া। এসব সালাতে কিরাআত ও রুকু-সিজদা লম্বা করা। রুকু থেকে উঠে এবং দুই সিজদায় মধ্যে আরো একটু বেশী সময় অতিবাহিত করা, এসময় কিছু দুআ আছে সেগুলে পড়া।
(
গ) সিজদার মধ্যে তাসবীহ পাঠ শেষে দুআ করা। কেননা সিজদাবনত অবস্থায় মানুষ তার রবের সবচেয়ে নিকটে চলে যায়। ফলে তখন দুআ কবুল হয়।
(
ঘ) বেশী বেশী তাওবা করবে আস্তাগফিরুল্লাহ পড়বে। ছগীরা কবীরা গোনাহ থেকে মাফ চাইবে। বেশী করে শির্কী গোনাহ থেকে খালেছ ভাবে তাওবা করবে। কারণ ইতিপূর্বে কোন শির্ক করে থাকলে নেক আমল তো কবুল হবেই না, বরং অর্জিত অন্য ভাল আমলও বরবাদ হয়ে যাবে। ফলে হয়ে যাবে চিরস্থায়ী জাহান্নামী।
(
ঙ) কুরআন তিলাওয়াত করবে। অর্থ ও ব্যাখ্যাসহ কুরআন অধ্যয়নও করতে পারেন। তাসবীহ তাহলীল ও যিক্র-আযকার করবেন। তবে যিকর করবেন চুপিসারে, নিরবে ও একাকী এবং কোন প্রকার জোরে আওয়ায করা ছাড়া। এভাবে যিকর করার জন্যই আল্লাহ কুরআনে বলেছেন :
সকাল ও সন্ধ্যায় তোমার রবের যিকর কর মনে মনে বিনয়ের সঙ্গে ভয়ভীতি সহকারে এবং জোরে আওয়াজ না করে। এবং কখনো তোমরা আল্লাহর যিকর ও স্মরণ থেকে উদাসীন হয়োনা। (আরাফ : ২০৫)
অতএব, দলবেধে সমস্বরে জোরে জোরে উচ্চ স্বরে যিক্র করা বৈধ নয়। এভাবে সম্মিলিত কোন যিকর করা কুরআনেও নিষেধ আছে নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তা করেন নি। যিকরের শব্দগুলো হল: সুবহানাল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ, লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ, আল্লাহু আকবার ইত্যাদি।
(চ) একাগ্রচিত্তে দুআ করা। বেশী বেশী ও বার বার দুআ করা। আর এসব দুআ হবে একাকী ও বিনম্র চিত্তে কবুল হওয়ার প্রত্যাশা নিয়ে। দুআ করবেন নিজের ও আপনজনদের জন্য. জীবিত ও মৃতদের জন্য, পাপমোচন ও রহমত লাভের জন্য, দুনিয়ার শান্তি ও আখিরাতের মুক্তির জন্য। তাছাড়া নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ রাতে নিচের এ দুআটি বেশী বেশী করার জন্য উৎসাহিত করেছেন :
হে আল্লাহ! তুমি তো ক্ষমার আধার, আর ক্ষমা করাকে তুমি ভালবাস। কাজেই তুমি আমাকে ক্ষমা করে দাও। (তিরমিযী)

লেখক : অধ্যাপক মোঃ নূরুল ইসলাম
সম্পাদনা : ড. আবু বকর মুহাম্মাদ জাকারিয়া আল মাদানী
সভাপতি, আল-ফিক্হ বিভাগ, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া


O.H.I 
For More Visit:
      http://www.youtube.com/trueohi
      


বই পড়ুনঃ 

রমাদান ম্যানুয়েল-২৬: যাকাতুল ফিতর


السلام عليكم
রমাদান ম্যানুয়েল-২: যাকাতুল ফিতর

আমাদের প্রতি আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের একটি  অনুগ্রহ এই যে তিনি আমাদের ইবাদত-বন্দেগিতে কোন ক্রটি হলে তার ক্ষতি পুষিয়ে নেয়ার ব্যবস্থা রেখেছেন। যেমন নফল নামাজ দ্বারা ফরজ নামাজের ক্ষতি পুষিয়ে নেয়ার ব্যবস্থা রেখেছেন। এমনিভাবে সিয়াম পালনে যে সকল ক্রটি-বিচ্যুতি হয়ে থাকে তার ক্ষতি পুষিয়ে দেয়ার জন্য যাকাতুল ফিতর আদায়ের বিধান দিয়েছেন। সাথে সাথে দরিদ্র ও অনাহার ক্লিষ্ট মানুষেরা যেন ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে পারে সে ব্যবস্থাও দিয়েছেন। কেউ যেন অর্থাভাবে ঈদের খুশি থেকে বঞ্চিত না থাকে সে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য ইসলামি সমাজকে এ বিধান দিয়েছেন। এ ফিতরা আদায়ের মাধ্যমে মানুষ আল্লাহর নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় করে থাকে। তিনিই তো সিয়াম পূর্ণ করা ও রমজানের রাতে কিয়ামসহ অন্যান্য নেক আমল এবং কল্যাণকর কাজ করার তওফিক দিয়েছেন।

যাকাতুল ফিতরের বিধান :
হাদিসে এসেছে
عن ابن عباس رضى الله عنهما قال: فرض رسول الله صلى الله عليه وسلم زكاة الفطر طهرة للصائم من اللغو والرفث وطعمة للمساكين، فمن أداها قبل الصلاة فهي مقبولـة، ومن أداها بعد الصلاة فهي صدقة من الصدقات.
رواه أبو داود
ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত তিনি বলেন : রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সিয়াম পালনকারীর জন্য সদকাতুল ফিতর আদায় অপরিহার্য করে দিয়েছেন। যা সিয়াম পালনকারীর অনর্থক কথা ও কাজ পরিশুদ্ধকারী ও অভাবী মানুষের জন্য আহারের ব্যবস্থা হিসেবে প্রচলিত। যে ব্যক্তি ঈদের সালাতের পূর্বে তা আদায় করবে তা সদকাতুল ফিতর হিসেবে গ্রহণযোগ্য হবে। আর যে ব্যক্তি  ঈদের সালাতের পর আদায় করবে তা সাধারণ  সদকা বলে গণ্য হবে। (আবু দাউদ)

অতএব সদকাতুল ফিতর ওয়াজিব। আল্লাহর রাসূল স. যা কিছু ওয়াজিব করেছেন তা পালন করা উম্মতের জন্য অপরিহার্য। আল্লাহর রাব্বুল আলামিন বলেন:
مَنْ يُطِعِ الرَّسُولَ فَقَدْ أَطَاعَ اللَّهَ وَمَنْ تَوَلَّى فَمَا أَرْسَلْنَاكَ عَلَيْهِمْ حَفِيظًا . (النساء :৮০)

যে রাসূলের আনুগত্য করল সে তো আল্লাহরই আনুগত্য করল। এবং যে মুখ ফিরিয়ে নিল আমি তোমাকে তাদের উপর তত্ত্বাবধায়ক পাঠাইনি। (সূরা আন-নিসা : ৮০)

অতএব রাসূল যা নির্দেশ দিয়েছেন তা মূলত আল্লাহরই নির্দেশ। আল্লাহ বলেন:
أَطِيعُوا اللَّهَ وَأَطِيعُوا الرَّسُولَ.  (النساء : ৫৯)

তোমরা আল্লাহর আনুগত্য কর এবং আনুগত্য কর রাসূলের। সূরা আন-নিসা: ৫৯

     যাকাতুল ফিতর কার উপর ওয়াজিব ?
যার কাছে  ঈদের দিন স্বীয় পরিবারের একদিন ও একরাতের ভরন-পোষণের খরচ বাদে  এক সাপরিমাণ খাদ্যসামগ্রী থাকবে  তার উপরই সদকাতুল ফিতর ফরজ হবে। যার উপর সদকাতুল ফিতর ফরজ তিনি নিজের পক্ষ থেকে যেমন আদায় করবেন তেমনি নিজের পোষ্যদের পক্ষ থেকেও আদায় করবেন।

       যাকাতুল ফিতর এর পরিমাণ :
যা কিছু প্রধান খাদ্য হিসেবে স্বীকৃত যেমন গম, যব, ভুট্টা, চাউল, খেজুর ইত্যাদি থেকে এক সাপরিমাণ দান করতে হবে। হাদিসে এসেছে
عن ابن عمر رضى الله عنهما قال : فرض رسول الله صلى الله عليه وسلم زكاة الفطر من رمضان، صاعا من تمر أو صاعا من شعير. رواه البخاري ومسلم
ইবনে উমার রা. থেকে বর্ণিত তিনি বলেন : রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অপরিহার্য করে দিয়েছেন রমজানের জাকাতুল ফিতর হিসেবে এক সাখেজুর অথবা এক সাগম।’ (বোখারি ও মুসলিম)

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর যুগের  সা’-র হিসেবে : এক সা’-তে ২ কেজি ৪০ গ্রাম।

কখন আদায় করবেন যাকাতুল ফিতর ?
সদকাতুল ফিতর আদায় করার দুটো সময় রয়েছে। একটি হল উত্তম সময় অন্যটি হল বৈধ সময়।  উত্তম সময় হল ঈদের দিন ঈদের সালাতের পূর্বে আদায় করা। যেমন হাদিসে এসেছে
عن ابن عمر رضى الله عنهما أن النبي صلى الله عليه وسلم أمر بزكاة الفطر قبل خروج الناس إلى الصلاة. رواه مسلم

ইবনে উমার থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ স. ইদগাহে যাওয়ার পূর্বে সদকাতুল ফিতর আদায় করার নির্দেশ দিয়েছেন। ( মুসলিম)

সদকাতুল ফিতর আদায় করার সুযোগ দেয়ার জন্যইতো ঈদুল ফিতরের সালাত একটু বিলম্বে আদায় করা মোস্তাহাব। সদকাতুল ফিতর আদায় করার বৈধ সময় হল: যদি কেউ ঈদের দু একদিন পূর্বে সদকাতুল ফিতর আদায় করে দেয় তবে আদায় হয়ে যাবে। সহি বোখারিতে আছে আব্দুল্লাহ ইবনে উমর এ রকম আদায় করতেন। তবে কোন সংগত কারণ ব্যতীত ঈদের সালাতের পরে আদায় করলে সদকাতুল ফিতর হিসেবে আদায় হবে না বরং সাধারণ নফল সদকা হিসেবে আদায় হবে। ওজর বা বিশেষ অসুবিধায় কেউ যদি ঈদের সালাতের পূর্বে আদায় করতে না পারে তবে সে ঈদের সালাতের পর আদায় করবে।

যাকাতুল ফিতর কাকে দেবেন ?
নিজ শহরের অভাবী ও দরিদ্র মানুষদের মাঝে সদকাতুল ফিতর আদায় করবেন। যারা জাকাত গ্রহণের অধিকার রাখে এমন অভাবী লোকদেরকে সদকাতুল ফিতর প্রদান করতে হবে। একজন দরিদ্র মানুষকে একাধিক ফিতরা দেয়া যেমন জায়েজ আছে তেমনি একটি ফিতরা বণ্টন করে একাধিক মানুষকে দেয়াও জায়েজ।


O.H.I 
For More Visit:
      http://www.youtube.com/trueohi
      


বই পড়ুনঃ