Monday, October 10, 2011

রাসূলুল্লাহ যেভাবে হজ করেছেন-৪


السلام عليكم
দৈনন্দিন পথনির্দেশিকা

রাসূলুল্লাহ যেভাবে হজ করেছেন-৪

হজ্জে উমরা করার আদেশ

৩৩- মারওয়া পাহাড়ে শেষ চক্করকালে তিনি বললেনহে লোকসকল!

لَوْ أَنِّى اسْتَقْبَلْتُ مِنْ أَمْرِى مَا اسْتَدْبَرْتُ لَمْ أَسُقِ الْهَدْىَ وَجَعَلْتُهَا عُمْرَةً فَمَنْ كَانَ مِنْكُمْ لَيْسَ مَعَهُ هَدْىٌ فَلْيَحِلَّ وَلْيَجْعَلْهَا عُمْرَةً.

আমি পরে যা বুঝেছি তা যদি আগে বুঝতে পারতামতাহলে হাদী বা কুরবানীর পশু সাথে নিয়ে 

আসতাম না এবং হজকে উমরায় পরিণত করতাম। তোমাদের মধ্যে যার সাথে হাদী বা পশু নেই সে যেন হালাল হয়ে যায় এবং এটাকে উমরায় পরিণত করে।[1] অন্য বর্ণনায় এসেছে,
أَحِلُّوا مِنْ إِحْرَامِكُمْ فَطُوفُوا بِالْبَيْتِ وَبَيْنَ الصَّفَا وَالْمَرْوَةِ وَقَصِّرُوا ثُمَّ أَقِيمُوا حَلاَلاً حَتَّى إِذَا كَانَ يَوْمُ التَّرْوِيَةِ فَأَهِلُّوا بِالْحَجِّ وَاجْعَلُوا الَّتِي قَدِمْتُمْ بِهَا مُتْعَةًً.

বায়তুল্লাহ্র তাওয়াফ ও সাফা-মারওয়ার মাঝে সাঈ করে তোমরা তোমাদের ইহরাম থেকে হালাল 

হয়ে যাও এবং চুল ছোট করে ফেল। অতপর হালাল হয়ে 

অবস্থান কর। এমনিভাবে যখন তারবিয়া দিবস[2] (যিলহজের আট তারিখ) হবেতখন তোমরা 

হজের ইহরাম বেঁধে তালবিয়া পাঠ কর। আর তোমরা যে হজের 
ইহরাম করে এসেছসেটাকে তামাত্তুতে পরিণত কর।[3]

৩৪- তখন সুরাকা ইব্‌ন মালিক ইব্‌ন জুশুম রা. মারওয়া পাহাড়ের পাদদেশে ছিলেনতিনি দাঁড়িয়ে 

বললেনইয়া রাসূলাল্লাহআমাদের এই উমরায় রূপান্তর 

করে তামাত্তু করা কি শুধু এ বছরের জন্য নাকি সব সময়ের জন্যতখন নবী  দুহাতের 

আঙ্গুলগুলো পরস্পরের মধ্যে প্রবেশ করিয়ে বললেন,

دَخَلَتِ الْعُمْرَةُ فِى الْحَجِّ  إِلَى يَوْمِ الْقِيَامَةِ ، لاَ بَلْ لأَبَدٍ أَبَدٍ، لاَ بَلْ لأَبَدٍ أَبَدٍ،

হজের ভেতরে উমরা কিয়ামত দিন পর্যন্ত প্রবিষ্ট হয়েছে। নাবরং তা সবসময়ের জন্যনাবরং তা সবসময়ের জন্য’ এ কথাটি তিনি তিনবার বললেন।[4]

৩৫- সুরাকা ইব্‌ন মালিক রা. বললেনইয়া রাসূলাল্লাহআমাদেরকে দীনের ব্যাখ্যা দিনআমাদেরকে যেন এখনই সৃষ্টি করা হয়েছে (অর্থাৎ আমাদেরকে 

সদ্যভূমিষ্ট সন্তানের ন্যায় দীনের তালীম দিন)। আজকের আমল কিসের ওপর ভিত্তি করেকলম যা লিখে শুকিয়ে গিয়েছে এবং তাকদীর যে বিষয়ে অবধারিত হয়ে গিয়েছেতার ভিত্তিতেনা কি ভবিষ্যতে রচিতব্য নতুন কোন বিষয়ের ভিত্তিতে?[5] তিনি বললেন,  

لَا، بَل فِيْ مَا جَفَّتْ بِه الْأَقْلاَمُ وَجَرَتْ بِه اْلمَقَادِيْرُ.

নাবরং যা লিখে কলম শুকিয়ে গিয়েছে এবং যে ব্যাপারে তাকদীর নির্ধারিত হয়ে গিয়েছেতা-ই তোমরা আমল করবে। তিনি বললেন, ‘তাহলে[6] আর 

আমলের দরকার কীতখন রাসূলুল্লাহ  বললেন,
اعْمَلُوا فَكُلٌّ مُيَسَّرٌ ]لِمَا خُلِقَ لَهُ[[7]
তোমরা আমল করে যাওতোমাদের কেউ যে জন্য সৃষ্ট হয়েছ তার জন্য সে কাজ করা সহজ করে দেয়া হয়েছে।[8]
৩৬- জাবের রা. বলেন, ‘তিনি আমাদেরকে আদেশ দিলেনআমরা হালাল হয়ে গেলে যেন হাদীর ব্যবস্থা করি।[9] ‘আমাদের মধ্য থেকে এক উটে সাতজন অংশ নিতে পারে।[10] ‘যার সাথে হাদী নেই সে যেন হজের সময়ে তিনদিন রোযা রাখে আর যখন নিজ পরিবারের নিকট অর্থাৎ দেশে ফিরে যাবে তখন যেন সাতদিন রোযা রাখে।[11]

৩৭- অতপর আমরা বললামকী হালাল হবেতিনি বললেন,   
الْحِلُّ كُلُّهُ.                সব কিছু হালাল হয়ে যাবে।[12]
৩৮- বিষয়টি আমাদের কাছে কঠিন মনে হল এবং আমাদের অন্তর সংকুচিত হয়ে গেল।[13]



চলবে...


[1]. সাহাবীদের মধ্যে যারা হাদী সঙ্গে নিয়ে আসেননি রাসূলুল্লাহ তাঁদেরকে উমরা করে হালাল হতে নির্দেশ দিয়েছেন

যাতে তাদের হজ মুশরিকদের বিপরীত হয়। কেননা মুশরিকরা মনে করতোহজের মাসসমূহে উমরা পালন 



জঘন্যতম অপরাধ (বুখারী : ৭২৩০)।



[2]. ৮ যিলহজকে ইয়াওমুত তারবিয়া বলা হয়। ইয়াওমুত-তারবিয়া অর্থ পানি পান করানোর দিন। মিনায় পানি ছিল না 

বলে এদিন হাজীরা

 পানি পান করে নিতেনসাথেও নিয়ে নিতেন এবং তাদের বাহন জন্তুগুলোকেও পানি 

পান করাতেন। তাই এই দিনকে পান করানোর দিন বলা হয়। ইব্ন কুদামাআল-মুগনী : ৩১৪।

[3]. বুখারী ও মুসলিম।

[4]. ইব্ন জারূদআল-মুনতাকা।

[5]. অর্থাৎআমাদের কর্মকান্ড কি আগেই নির্ধারিত নাকি আমরা সামনে যা করব সেটাই চূড়ান্ত?

[6]. মুসনাদে আহমদ।


[7]. অর্থাৎ তাকদীরে যদি ভালো লিখা হয়ে থাকেতাহলে ভাল কাজ করা তার জন্য সহজ হবে। আর যদি তাকদীরে 

খারাপ লিখা থাকেতবে 

খারাপ কাজ করা তার জন্য সহজ করে দেয়া হবে।

[8]. মুসনাদে আহমদ।

[9]. মুসলিমমুসনাদে আহমদ।


[10]. মুসনাদে আহমদ।

[11]. মুয়াত্তাবায়হাকী।

[12]. মুসনাদে আহমদতাহাবী।

[13]. মুসনাদে আহমদনাসাঈ।

be Organized by Holy Islam 
O.H.I 
For More Visit:

বই পড়ুনঃ http://ohilibrary.blogspot.com