Tuesday, January 31, 2012

রাসুলুল্লাহ (সঃ) কথাবার্তার স্বরুপ


   السلام عليكم
দৈনন্দিন পথনির্দেশিকা
রাসুলুল্লাহ (সঃ) কথাবার্তার স্বরুপ
                      
নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অত্যন্ত সুন্দর কথোপকথনকারী ও সুমিষ্ট ছিলেন।
হযরত রাফে ইবন খাদীজ (রাহতে বর্ণিতহুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেনআমি(বাকপটুত্বে ও ভাষার অলংকারেসবচেয়ে বেশি ফসীহ ও বলীগ। (নাসাঈ ও হাকেম)
হযরত বুরাইদা(রাথেকে বর্ণিতবেহেশতীগণ বেহেশতে হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর ভাষায়(আরবীতেকথাবার্তা বলবে। (আবুল হাসান ইবন দ্বাহকাকশামায়েলে)
হযরত ইবন আব্বাস (রাহতে বর্ণিতরাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অল্প কথা বলতেন, হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কথা এত বিন্যাসের সাথে হতযেমন মুক্তার মালা। (হাকেম)
হযরত আয়েশা সিদ্দিকা (রাবলেনহুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তোমাদের ন্যায় অধিক কথা বলতেন না
(
তিবরানী)
হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কথা সবচেয়ে বেশি সংক্ষেপিত হতহযরত জিবরাঈল(ও হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের যখন যে বিষয়ে প্রয়োজন হত অত্যন্ত সংক্ষিপ্ত শব্দে তা বলে দিতেন।হযরত ইবন আব্বাস (রাহতে বর্ণিতহুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কথা অত্যন্ত সংক্ষেপ ও কম শব্দে অধিক অর্থ বিশিষ্ট হততাতে কম বেশ হওয়ার অবকাশ ছিল নাতাঁর কথা মতির মালার ন্যায় গাঁথা হত। রাসুলুল্লাহ হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেমে থেমে একটু একটু করে কথা বলতেনযেন শ্রোতারা হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর বাণী মুখস্ত করতে পারে।
হযরত হিন্দ ইবন আবি হালা (রাহতে বর্ণিতরাসুলুল্লাহ হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর আওয়াজ উচ্চ ও কথা বলার ভঙ্গী মধুর ছিল। (শামায়েলে তিরমিযি)
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বেশির ভাগ সময় চুপ থাকতেনপ্রয়োজন ছাড়া আদৌ কথা বলতেন না।হযরত আব্দুল্লাহ ইবন উমার (রাহতে বর্ণিতহুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অশ্লীল কথা বলতেন না। ক্রোধ ও আবেগ সর্বদাই সত্য কথা বলতেন। (আবু দাউদ)
হযরত আলী(রাহতে বর্ণিতযে ব্যক্তি কোন অশ্লীল কথা বলে ফেলত, হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতেন। অগত্যা কোন শক্ত কথা যদি হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর বলতেই হততবে তা তিনি ইঙ্গিতে বলতেন, কখনও পরিষ্কারভাবে বলতেন না।
হযরত আলী(রাহতে বর্ণিতহুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন নীরবতা অবলম্বন করতেনতখন উপস্থিত লোকজন কথা বলতেনতিনি মজলিসে কারো কথায় বাধা দিতেন না। হযরত জাবের (রাবলেনহুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম শুভাকাংক্ষী হিসেবে হাসি পরিত্যাগ করে লোকদেরকে নসিহত করতেন। (মুসলিম শরীফ)
হযরত আব্দুল্লাহ ইবন হারেস(রা)থেকে বর্ণিতরাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম স্বীয় সাহাবীদের(রাসামনে বেশি বেশি মুচকি হাসি দিতেন এবং তাদের কথাবার্তার উপর অত্যন্ত আনন্দিত হতেন এবং তাদের সাথে বেশি মিলে মিশে থাকতেন। (তিরমিযি)
একদা একটি গ্রামবাসী রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের খেদমতে এমতাবস্থায় হাজির হলযখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মন পেরেশান ছিলসাহাবায়ে কেরাম(রারাসুলুল্লাহর উজ্জ্বল চেহারায় বিষন্নতার ভাব দেখে বুঝে ফেললেন যেহুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মন আজ পেরেশান। ঐ গ্রাম্য ব্যক্তি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নিকট কিছু জিজ্ঞেস করতে চাইলকিন্তু সাহাবায়ে কেরাম (রাতাকে নিষেধ করলেন যেএ সময় রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর মন পেরেশানএ সময় কিছু জিজ্ঞেস করো না। গ্রাম্য ব্যক্তি বললতোমরা আমাকে নিষেধ করো না। ওই সত্ত্বার কসম ! যিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে সত্য নবী হিসেবে প্রেরণ করেছেনআমি হুজুর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে না হাসিয়ে ছাড়বো না। সারকথা , ঐ গ্রাম্য ব্যক্তি আরজ করলো যেইয়া রাসুলুল্লাহ ! শুনতে পেলাম যেদাজ্জাল ছরিদ(এক প্রকার খাদ্যনিয়ে আসবেআপনার কি এ অনুমতি যেআমি অনাহারে মারা যাইআর আদৌ ঐ ছরিদ আহার না করিনা এ অনুমতি যেআমি ঐ ছরিদ খুব পেট ভরে খেয়েআল্লাহ তায়ালার উপর ঈমান এনে তাকে(দাজ্জালঅস্বীকার করি?
একথা শুনামাত্র রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এত হাসলেন যেহুজুর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর দাঁত মোবারক প্রকাশ হয়ে গেল। অতঃপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঐ গ্রাম্য ব্যক্তির উত্তরে এরশাদ করলেনযে বস্তুর দ্বারা আল্লাহ তায়ালা অন্যান্য মুসলমানদেরকে ঐ (দাজ্জালকাফের থেকে বেপরোয়া করে দিবেনতোমাকেও ঐ জিনিসের দ্বারা ঐ অভিশপ্ত থেকে বেপরোয়া করে দিবেন।
হযরত হিন্দ ইবন আবি হালা(রাবর্ণনা করেন যেরাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাহাবাগণ(রা)ও হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের অনুকরণ ও সম্মানার্থে তাঁর সামনে শুধু মুচকি হাসি হাসতেনউচ্চ হাসি দিতেন না (শামায়েলে তিরমিযি)
হুজুর হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সর্বদা প্রফুল্লচিত্ত ও আনন্দিত থাকতেনকিন্তু কোরআন মাজীদ অবতীর্ণ হবার সময়কেয়ামতের আলোচনার সময় ও ওয়াজের সময়হুজুর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর চেহারায় মুচকি হাসির স্থলেভয় ভীতির ভাব প্রকাশ পেত।
হযরত ইবন উমার(রাথেকে বর্ণিতরাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রকৃত সন্তুষ্টির সময় অত্যন্ত আনন্দিত ও প্রফুল্ল থাকতেনহুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ওয়াজ শরীফ(নসীহতমূলকঘটনায় পরিপূর্ণ থাকতহাস্যকর ও পরিহাস থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত থাকতরাসুলুল্লাহ (সাযদি কখনও রাগ হতেন তবে শুধু আল্লাহ তায়ালা ও দ্বীনের সন্তুষ্টির জন্যেই হতেন। (ইবন হাব্বান)

Collected from: http://www.sorolpath.com


be Organized by Holy Islam 
O.H.I 
ভিজিট করুন