Wednesday, May 12, 2010

শিশুর জন্য মায়ের বুকের দুধের বিকল্প নেই


 السلام عليكم
দৈনন্দিন পথনির্দেশিকা
শিশুর জন্য মায়ের বুকের দুধের বিকল্প নেই

আবু উমামাহ আল-বাহিলি(রা) থেকে বর্ণিত;
মিরাজের রাতের ঘটনা বর্ণনা করতে গিয়ে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন,অতঃপর আমাকে আরও সামনে নিয়ে যাওয়া হল.
ইত্যবসরে কতিপয় মহিলাকে দেখলাম. যাদের বুকের ছাতি সাপ দংশন করছে.
আমি জিজ্ঞেস করলাম
এরা কোন মহিলা?
বলা হলো তারা সে মহিলা যারা নিজের সন্তানকে নিজের দুধ পান করাতো না.

ইবনে খুজামাহ হাদীস নং-১৯৮৬সহীহ উত তারগীব-৯৯১
বিস্তারিত পড়ুন :





be Organized by Holy Islam O.H.I For More Visit:


"কখনো নয়!আমি একটি অস্থায়ী জীবনের সঙ্গে এমন জীবনের লেনদেন করব না যা কখনো অদৃশ্য হয় না"



"কখনো নয়!আমি একটি অস্থায়ী জীবনের সঙ্গে এমন জীবনের লেনদেন করব না যা কখনো অদৃশ্য হয় না"

যেসব সংস্কারক যারা একান্তই আল্লাহর উপর ভরসা করে আল্লাহর রাস্তায় তাদের জীবন দিয়েছেন তারাই প্রকৃত মুসলিমদের অন্তরে উচুস্থান লাভ করেছেন।
এসব সংস্কারকদের মধ্যে রয়েছেন সাইয়েদ কুতুব, যার ফাসির ঘটনা গভীর প্রভাব রেখে গেছে তাদেরই কাছে যারা তাকে জানত ও তার বিশ্বাস অনুভব করত ।


সাইয়েদ কুতুব-যিনি ছিলেন মিশরের প্রধান ইসলামী দল "ইখয়ানুল মুসলেমীন"-এর কেন্দ্রীয় নেতা। "তাফসীর ফি যিলালিল কুরআন", "মাইলষ্টোন" সহ অসংখ্য জাগরণ সৃষ্টিকারী বইয়ের লেখক।

এর মধ্যে ছিল দুজন পুলিশ, যারা তার ফাঁসির সাক্ষ্য ছিল (১৯৬৬)

দুজনের একজনের ভাষ্য ছিল এরকমঃ
এটি এমন একটি ঘটনা যা আমরা আগে কখনো ভাবিনি, যা আমাদের গোটা জীবনকে পরিবর্তন করে দিয়েছিল। তখন প্রতি রাতে, আমরা সামরিক কারাগারে গ্রহণ করতাম বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষদের। এর মধ্যে ছিল বৃদ্ধ, যুবক ও মহিলা। আমাদেরকে বলা হয়েছিল যে এইগুলি ইহুদীদের সাথে আতাঁত করে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। তাই এদের কাছ থেকে গোপণ তথ্য বের করতে হবে। এর জন্য কেবল একটি পন্থাই ছিল তাহল চরমতম টর্চার করা। তাই আমরা সর্বান্তক চেষ্টায় থাকতাম বিভিন্ন ধরণের লাঠি ও চাবুক ব্যবহার করে তাদের দেহ কাঠামোর পরিবর্তন করার কাজে। আমরা এই বিশ্বাস করতাম যে আমরা একটি পবিত্র কাজ করছি। কিন্তু,শীঘ্রই আমরা কিছু অবধগোম্য জিনিষ খুঁজে পেলাম। আমরা দেখতাম এদের মধ্যে কিছু লোক গভীর রাতে তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করে। সবসময় মুখে আল্লাহর নাম উচ্চারণ করত এমনকি নির্যাতন করার মুহুর্তেও।

কিছু লোক মারা গিয়েছিল চাবুকের চরমতম আঘাতে বা হিংস্র কুকুরের আক্রমণে। অথচ মৃত্যূ মুহুর্তেও তারা হাসছিল এবং আল্লাহর জিকির জারী রেখেছিল।
একারণে, আমরা সন্দেহাতীত হয়ে গেলাম যে আমাদেরকে কি বলা হল। কারণ এটি অস্বাভাবিক ছিল যে এরকম ধর্মপ্রাণ বিশ্বাসী বিশ্বাসঘাতক আল্লাহর শত্রুর (ইহুদী) সঙ্গে একত্রিত হয়েছে।


আমরা গোপণে সম্মত হলাম,যতটা সম্ভব তাদেরকে শাস্তি দেয়া থেকে বিরত থাকতে হবে আর আমাদের পক্ষে যতটা সম্ভব তাদেরকে সাহায্য করব। আল্লাহর রহমতে সেই কারাগারে আমাদের দীর্ঘ সময় থাকতে হয়নি। আমাদের শেষ নির্দেশিত কাজ ছিল একটি সেলে যেখানে একজনকে বন্দীকে করে রাখা হয়েছিল। তাকে তাদের সমস্ত কাজের মূল হোতা এবং সর্বাপেক্ষা বিপজ্জনক হিসেবে আমাদেরকে জানানো হয়েছিল। তার নাম ছিল সাইয়েদ কুতুব।


তাকে এত বেশী অত্যাচার করা হয়েছিল যে নিজ পায়ে দাঁড়িয়ে ভবিষ্যতে তার পক্ষে আর হাটা সম্ভবপর ছিল না।


আদালতের কাঠগড়ায় অন্যান্য ইখওয়ান কর্মীদের সাথে সাঈদ
এক রাতে,তারা তাকে ফাসির কথা এসে বলল। তারা শেষবারের জন্য সাইয়েদ কুতুবকে আল্লাহকে ডেকে নিতে বলল ।
সেই দিনের সকালে,আমরা তার বাহু ধরেছিলাম এবং একটি বদ্ধ গাড়িতে তাকে উঠালাম যেখানে আরও কিছু বন্দী ছিল। কিছুক্ষণের মধ্যে আমরা সেখানে পৌছে গেলাম। মিলিটারীর কিছু গাড়ি আমাদের পিছনেই আসছিল। মুহুর্তের মধ্যেই সৈন্যরা তাদের অস্ত্র নিয়ে নির্ধারিত স্থানে দাঁড়িয়ে গেল।

সামরিক কর্মকর্তারা ফাসির যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করল। একটি দড়ি তার গলার ধারেকাছে রাখা হল। জল্লাদ পূর্ণ প্রস্তুতিতে দাঁড়িয়ে গেল। একটি কাল পতাকার নীচে,ফাঁসি কার্যকর করার স্থানে কিছু সৈন্য দাঁড়িয়েছিল বন্দুক উচু করে। সর্বাপেক্ষা দারুন ব্যাপার ছিল মৃত্যূর সামনে দাঁড়িয়ে বন্দীরা একেকজন যে কথাগুলি বলে চলেছিল। তারা একে অপরকে জড়িয়ে নবী মুহাম্মদ (সঃ) এবং তার সাহাবীদের সঙ্গে জান্নাতের থাকার অভিপ্রায়ে একত্রে বলে চলেছিল, "আল্লাহ মহান প্রশংসা কেবল তার জন্য"

এরকম ভয়ংকর মূহুর্তে আমরা একটি গাড়ি আসার আওয়াজ শুনলাম। গার্ড দরজা খুলে দিল এবং একজন উচু পদের সামরিক অফিসার নেমে এল। নেমেই উচু স্বরে চিৎকার করে জল্লাদকে থামতে বলল। সে সাঈদের প্রতি অগ্রসর হয়ে তার গলা থেকে দড়ি আর চোখের কাপড় সরিয়ে নেয়ার নির্দেশ দিল। তারপর সে কাঁপা কাঁপা স্বরে নিজকে সম্বোধন করে বলল: "আমার ভাই,সাঈদ,আমি তোমার জীবন উপহার হিসেবে নিয়ে এসেছি আমাদের ধৈর্য্যশীল ও ক্ষমাশীল প্রেসিডেন্টের কাছ থেকে (মিশরীয় রাষ্ট্রপতি জামাল আব্দুল নাসের)।




একটি শব্দসমষ্টি যেটি আপনি সই করবেন তা আপনার ও আপনার ভাইদের ক্ষমা পাবার কারণ হবে। সে উত্তরের জন্য অপেক্ষা করেনি,একটি নোটবুক খুলে ধরল আর বল: লেখ,আমার ভাই,এই বাক্যটি কেবল (আমার ভূল ছিল এবং আমি দুঃখ প্রকাশ করছি)সাঈদ পরিষ্কার চোখে তাকে দেখলএকটি হাসি-এরকম হাসি যা আগে তার মুখমন্ডলে কখনো দেখিনি সে অকস্মাৎ শান্ত ভঙ্গিমাতে অফিসারকে বলল “কখনো নয়!আমি একটি অস্থায়ী জীবনের সঙ্গে এমন জীবনের লেনদেন করব না যা কখনো অদৃশ্য হয় না”

শুনে অফিসার দুঃখের সঙ্গে বলল: এর অর্থ কিন্তু মৃত্যূ,সাঈদ!”

সাঈদ উত্তর দিয়েছিল: আল্লার রাস্তায় মৃত্যূকে স্বাগত জানাই, আল্লাহু আকবার!” 


এটি তার অবিচল বিশ্বাসকেই প্রকাশ করে। অফিসার এর পক্ষে আর কিছু বলা সম্ভব হল না। তাই সে জল্লাদকে ফাঁসি কার্যকর করার নির্দেশ দিল। শীঘ্রই সাঈদ এবং তার ভাইদের শরীর স্পন্দন থামাল। তাদের প্রত্যেকের জিহ্বা যে শব্দসমষ্টি শেষে বলেছিল তা আমরা কোনদিন ভুলতে পারব না এবং সেই পরিস্থিতি যার ধাক্কা আমরা এখনও অনুভব করি,''আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নাই, মুহাম্মদ(সঃ) আল্লাহর রাসুল" এই ভাবেই আমরা ধার্মিক এবং আল্লাহভীরু হয়েছিলাম। আমরা সাহায্য চাই আল্লাহর কাছে তার প্রতি বিশ্বাস নিয়েই যেন থাকতে পারি।

মূল: মুহাম্মদ আবদুল আযীয আল-মুসনাদ