Tuesday, January 31, 2012

রাসুলুল্লাহ (সঃ) কথাবার্তার স্বরুপ


   السلام عليكم
দৈনন্দিন পথনির্দেশিকা
রাসুলুল্লাহ (সঃ) কথাবার্তার স্বরুপ
                      
নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অত্যন্ত সুন্দর কথোপকথনকারী ও সুমিষ্ট ছিলেন।
হযরত রাফে ইবন খাদীজ (রাহতে বর্ণিতহুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেনআমি(বাকপটুত্বে ও ভাষার অলংকারেসবচেয়ে বেশি ফসীহ ও বলীগ। (নাসাঈ ও হাকেম)
হযরত বুরাইদা(রাথেকে বর্ণিতবেহেশতীগণ বেহেশতে হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর ভাষায়(আরবীতেকথাবার্তা বলবে। (আবুল হাসান ইবন দ্বাহকাকশামায়েলে)
হযরত ইবন আব্বাস (রাহতে বর্ণিতরাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অল্প কথা বলতেন, হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কথা এত বিন্যাসের সাথে হতযেমন মুক্তার মালা। (হাকেম)
হযরত আয়েশা সিদ্দিকা (রাবলেনহুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তোমাদের ন্যায় অধিক কথা বলতেন না
(
তিবরানী)
হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কথা সবচেয়ে বেশি সংক্ষেপিত হতহযরত জিবরাঈল(ও হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের যখন যে বিষয়ে প্রয়োজন হত অত্যন্ত সংক্ষিপ্ত শব্দে তা বলে দিতেন।হযরত ইবন আব্বাস (রাহতে বর্ণিতহুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কথা অত্যন্ত সংক্ষেপ ও কম শব্দে অধিক অর্থ বিশিষ্ট হততাতে কম বেশ হওয়ার অবকাশ ছিল নাতাঁর কথা মতির মালার ন্যায় গাঁথা হত। রাসুলুল্লাহ হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেমে থেমে একটু একটু করে কথা বলতেনযেন শ্রোতারা হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর বাণী মুখস্ত করতে পারে।
হযরত হিন্দ ইবন আবি হালা (রাহতে বর্ণিতরাসুলুল্লাহ হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর আওয়াজ উচ্চ ও কথা বলার ভঙ্গী মধুর ছিল। (শামায়েলে তিরমিযি)
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বেশির ভাগ সময় চুপ থাকতেনপ্রয়োজন ছাড়া আদৌ কথা বলতেন না।হযরত আব্দুল্লাহ ইবন উমার (রাহতে বর্ণিতহুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অশ্লীল কথা বলতেন না। ক্রোধ ও আবেগ সর্বদাই সত্য কথা বলতেন। (আবু দাউদ)
হযরত আলী(রাহতে বর্ণিতযে ব্যক্তি কোন অশ্লীল কথা বলে ফেলত, হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতেন। অগত্যা কোন শক্ত কথা যদি হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর বলতেই হততবে তা তিনি ইঙ্গিতে বলতেন, কখনও পরিষ্কারভাবে বলতেন না।
হযরত আলী(রাহতে বর্ণিতহুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন নীরবতা অবলম্বন করতেনতখন উপস্থিত লোকজন কথা বলতেনতিনি মজলিসে কারো কথায় বাধা দিতেন না। হযরত জাবের (রাবলেনহুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম শুভাকাংক্ষী হিসেবে হাসি পরিত্যাগ করে লোকদেরকে নসিহত করতেন। (মুসলিম শরীফ)
হযরত আব্দুল্লাহ ইবন হারেস(রা)থেকে বর্ণিতরাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম স্বীয় সাহাবীদের(রাসামনে বেশি বেশি মুচকি হাসি দিতেন এবং তাদের কথাবার্তার উপর অত্যন্ত আনন্দিত হতেন এবং তাদের সাথে বেশি মিলে মিশে থাকতেন। (তিরমিযি)
একদা একটি গ্রামবাসী রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের খেদমতে এমতাবস্থায় হাজির হলযখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মন পেরেশান ছিলসাহাবায়ে কেরাম(রারাসুলুল্লাহর উজ্জ্বল চেহারায় বিষন্নতার ভাব দেখে বুঝে ফেললেন যেহুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মন আজ পেরেশান। ঐ গ্রাম্য ব্যক্তি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নিকট কিছু জিজ্ঞেস করতে চাইলকিন্তু সাহাবায়ে কেরাম (রাতাকে নিষেধ করলেন যেএ সময় রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর মন পেরেশানএ সময় কিছু জিজ্ঞেস করো না। গ্রাম্য ব্যক্তি বললতোমরা আমাকে নিষেধ করো না। ওই সত্ত্বার কসম ! যিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে সত্য নবী হিসেবে প্রেরণ করেছেনআমি হুজুর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে না হাসিয়ে ছাড়বো না। সারকথা , ঐ গ্রাম্য ব্যক্তি আরজ করলো যেইয়া রাসুলুল্লাহ ! শুনতে পেলাম যেদাজ্জাল ছরিদ(এক প্রকার খাদ্যনিয়ে আসবেআপনার কি এ অনুমতি যেআমি অনাহারে মারা যাইআর আদৌ ঐ ছরিদ আহার না করিনা এ অনুমতি যেআমি ঐ ছরিদ খুব পেট ভরে খেয়েআল্লাহ তায়ালার উপর ঈমান এনে তাকে(দাজ্জালঅস্বীকার করি?
একথা শুনামাত্র রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এত হাসলেন যেহুজুর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর দাঁত মোবারক প্রকাশ হয়ে গেল। অতঃপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঐ গ্রাম্য ব্যক্তির উত্তরে এরশাদ করলেনযে বস্তুর দ্বারা আল্লাহ তায়ালা অন্যান্য মুসলমানদেরকে ঐ (দাজ্জালকাফের থেকে বেপরোয়া করে দিবেনতোমাকেও ঐ জিনিসের দ্বারা ঐ অভিশপ্ত থেকে বেপরোয়া করে দিবেন।
হযরত হিন্দ ইবন আবি হালা(রাবর্ণনা করেন যেরাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাহাবাগণ(রা)ও হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের অনুকরণ ও সম্মানার্থে তাঁর সামনে শুধু মুচকি হাসি হাসতেনউচ্চ হাসি দিতেন না (শামায়েলে তিরমিযি)
হুজুর হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সর্বদা প্রফুল্লচিত্ত ও আনন্দিত থাকতেনকিন্তু কোরআন মাজীদ অবতীর্ণ হবার সময়কেয়ামতের আলোচনার সময় ও ওয়াজের সময়হুজুর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর চেহারায় মুচকি হাসির স্থলেভয় ভীতির ভাব প্রকাশ পেত।
হযরত ইবন উমার(রাথেকে বর্ণিতরাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রকৃত সন্তুষ্টির সময় অত্যন্ত আনন্দিত ও প্রফুল্ল থাকতেনহুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ওয়াজ শরীফ(নসীহতমূলকঘটনায় পরিপূর্ণ থাকতহাস্যকর ও পরিহাস থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত থাকতরাসুলুল্লাহ (সাযদি কখনও রাগ হতেন তবে শুধু আল্লাহ তায়ালা ও দ্বীনের সন্তুষ্টির জন্যেই হতেন। (ইবন হাব্বান)

Collected from: http://www.sorolpath.com


be Organized by Holy Islam 
O.H.I 
ভিজিট করুন  



Monday, January 30, 2012

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের যথার্থ অনুসরণ করা হল ভালবাসার দাবি


السلام عليكم
দৈনন্দিন পথনির্দেশিকা
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের যথার্থ অনুসরণ করা হল ভালবাসার দাবি

                     

আল্লাহ তাআলা মুহাম্মাদ সা.কে কেন রাসূল হিসাবে প্রেরণ করলেনতার প্রতি আমাদের করণীয় কিআল্লাহ তাআলা রাসূলকে এ জন্য পাঠিয়েছেন আমরা যেন তার অনুসরণ করি। তার নির্দেশনা মত আল্লাহর হুকুম মান্য করি। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেন -
وَمَا أَرْسَلْنَا مِنْ رَسُولٍ إِلَّا لِيُطَاعَ بِإِذْنِ اللَّهِ
আমি রাসূলকে এ জন্যই পাঠিয়েছি যেআল্লাহর নির্দেশ অনুসারে তার আনুগত্য করা হবে। (সূরা আন-নিসা: ৬৪)
আল্লাহর রাসূল সা.কে ভালবাসা ও তাকে মুহাব্বত করা হবে ঈমানের দাবী। যার মধ্যে রাসূলের ভালবাসা নেই সে ঈমানদার নয়। রাসূলের ভালবাসার পরিচয় দেবেন কিভাবেএর দুটি পদ্ধতি রয়েছে।  এক. আল্লাহর নির্দেশ মত জীবনের সর্বক্ষেত্রে তার অনুসরণ করে  ও এর জন্য যে কোন ত্যাগ ও কুরবানী স্বীকারে প্রস্তুত থেকে। দুই. তাঁকে অনুসরণ না করে তার গুণগান ও প্রশংসাকীর্তনে ব্যস্ত থেকেমীলাদ পড়েমীলাদুন্নবী উদযাপন করে।

আসলে ভালবাসা প্রমাণ করার কোন পদ্ধতিটি সঠিকআমার মনে হয় মতলববাজ ব্যতিত সকল মানুষ উত্তর দেবে সঠিক হল প্রথমটিই।
আবু লাহাব রাসূলুল্লাহ সা.কে ভালবাসতেন। এতটাই ভালবাসতেন যে তাঁর জন্মগ্রহণের সুসংবাদ যে ক্রীতদাসীর কাছে শুনলেন আনন্দের অতিশয্যে সে ক্রীতদাসী সুয়াইবাকে মুক্ত করে দিলেন। এবং নবুয়্যত পূর্ব পুরো চল্লিশ বছর তার ভালবাসা ছিল অক্ষত। কিন্তু রাসূলের আনুগত্য না করার কারণে পাল্টে গেল আবু লাহাবের পুরো চেহারা।
আবু তালেবের কথা কারো অজানা নয়। আল্লাহর রাসূলের একেবারে শৈশব থেকে পঞ্চাশ বছর বয়স পর্যন্ত তাকে নিজ সন্তানের মত ভালবেসেছেন। লালন-পালন করেছেন আদরস্নেহমমতাভালবাসা দিয়ে। আর এ ভালবাসতে গিয়ে অনেক কষ্ট স্বীকার করেছেন। দীর্ঘ তিন বছর খেয়ে না খেয়ে উপোষ থেকে শোআবে আবু তালেব উপত্যকায় নির্বাসিত জীবন-যাপন করেছেন তাঁরই জন্য। ছায়ার মত সাথে থেকেছেন বিপদ-আপদে। রাসূল মুহাম্মাদের অনুসরণ করা দরকার এটা মুখে স্বীকারও করেছেন। কবিতাও রচনা করেছেন তাঁর উদ্দেশ্যে। কিন্তু অনুসরণ করলেন না তাঁর আনীত দাওয়াত ও পয়গামের। ফলে সব কিছুই বৃথা গেল। তার জন্য দুআ-প্রার্থনা করতেও নিষেধ করা হল।
পশ্চিমা বহু লেখক ও চিন্তাবিদরা মুহাম্মাদ সা.কে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব বলে স্বীকার করেন। কিন্তু তিনি যে সকল মানুষের জন্য অনুসরণীয়-অনুকরণীয় নির্ভুল আদর্শতাঁর নির্দেশিত পথই একমাত্র মুক্তির পথএ বিষয়টি তাদের কাছে বোধগম্য হয়ে উঠে না।
গ্যেটে কারলাইল থেকে শুরু করে অদ্যাবধি অতি সাম্প্রতিক মাইকেল হার্ট (দি-হান্ড্রেড লেখক) পর্যন্ত বহু লেখকগবেষকচিন্তাবিদ ও রাজতৈনিক নেতা মুহাম্মাদ সা. সম্পর্কে অনেক সপ্রশংস- উক্তি,  সীমাহীন ভক্তির নৈবদ্য পেশ করেছেনঅকুণ্ঠ চিত্তে স্বীকার করেছনআবহমান পৃথিবীর সর্বকালীন প্রেক্ষাপটে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামই সর্বোত্তম  ব্যক্তি।
কিন্তু প্রশ্ন হল তাদের এ প্রশংসাও ভালবাসার দাবি কি কোন কল্যাণে আসবে?
আজকে যারা নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মুহাব্বত ও ভালবাসার দাবি নিয়ে তাঁরই নির্দেশ লংঘন করে বিভিন্ন বেদআতি কাজ-কর্মের প্রসারে লিপ্ত। তার ধর্মে যা তিনি অনুমোদন করে যাননি তা যারা অনুমোদন করতে ব্যস্ত তাদের পরণিতি কি হবেএর আলোকে বিষয়টি বিবেচনা করার দাবি অসংগত হবে না।
এ ক্ষেত্রে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের একটি বাণী পেশ করা যেতে পারে।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ
ألا وإني فرطكم على الحوض وأكاثر بكم الأمم، فلا تسودوا وجهي، ألا وإني مستنقذ أناسا ومستنقذ مني أناس، فأقول يا رب أصيحابي! فيقول إنك لا تدري ما أحدثوا بعدك. (رواه ابن ماجه، وصححه الألباني في صحيح سنن ابن ماجه)
শুনে রাখো! হাউজে কাউছারের কাছে তোমাদের সাথে আমার দেখা হবে। তোমাদের সংখ্যার আধিক্য নিয়ে আমি গর্ব করব। সেই দিন তোমরা আমার চেহারা মলিন করে দিওনা। জেনে রাখো! আমি সেদিন অনেক মানুষকে জাহান্নাম থেকে মুক্ত করার চেষ্টা চালাব। কিন্তু তাদের অনেককে আমার থেকে দূরে সরিয়ে নেয়া হবে। আমি বলব: হে আমার প্রতিপালক! তারা তো আমার প্রিয় সাথী-সংগীআমার অনুসারী। কেন তাদের দূরে সরিয়ে দেয়া হচ্ছেতিনি উত্তর দেবেন: আপনি জানেন না,আপনার চলে আসার পর তারা ধর্মের মধ্যে কি কি নতুন বিষয় আবিস্কার করেছে। (ইবনে মাজাহ)

অবশ্যই রাসূল সা.কে ভালবাসতে হবে। তার জন্য বেশী বেশী করে দরূদ ও সালাম পেশ করতে হবে। তার প্রশংসা করতে হবে। সর্বোপরি তাঁর সকল আদর্শ ও সুন্নাতের অনুসরণ অনুকরণ করতে হবে। কিন্তু এগুলো করতে যেয়ে তিনি যা নিষেধ করেছেন আমরা যেন তার মধ্যে পতিত না হই। যদি হই তাহলে বুঝে নিতে হবে ভাল কাজ করতে গিয়ে শয়তানের ফাঁদে আমরা পা দিয়েছি।

একটি সংশয় নিরসন
যারা বেদআতে লিপ্ত তারা অনেক সময় তাদের বেদআতি কাজকে সঠিক বলে প্রমাণ করার জন্য কুরআন বা হাদীস থেকেও উদ্ধৃতি দেনযদিও তার পন্থা-পদ্ধতি গ্রহণযোগ্য নয়। ঈদে মীলাদের ব্যাপারে তাদের অনেকে বলেন ঈদে মীলাদ বা রাসূলে কারীম সা.  এর জন্ম দিন পালন হাদীস দ্বারা প্রমাণিত। হাদীসটি হল:
عن أبي قتادة رضي الله عنه أن رسول الله صلى الله عليه وسلم سئل عن صوم يوم الاثنين، فقال:  ذلك يوم ولدت فيه ويوم بعثت فيه أو أنزل علي فيه.  رواه مسلم
সাহাবী আবু কাতাদাহ রা. থেকে বর্ণিত যে রাসূলুল্লাহ সা. কে সোমবারে রোযা রাখার বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হল। তিনি বললেন, এ দিনে আমার জন্ম হয়েছে এবং এ দিনে আমাকে নবুওয়াত দেয়া হয়েছে বা আমার উপর কুরআন নাযিল শুরু হয়েছে (বর্ণনায় : মুসলিম)
তারা এ হাদীস পেশ করে বলতে চান যে আল্লাহর রাসূল সা.  সোমবার দিনে জন্মগ্র্রহণ করেছেন বলে ঐ দিনে রোযা পালন করে তা উদযাপন করাকে সুন্নাত করেছেন। তাই জন্মদিন পালন এ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত।
জ  ও  য়া  ব
এক. আল্লাহর রাসূল সা.  শুধু জন্ম দিনের কারণে সোমবার রোযা রাখতে বলেননি। বরং বৃহস্পতিবারও রোযা রাখাকে সুন্নাত করেছেন। সেটা তাঁর জন্মদিন নয়।
হাদীসে এসেছেঃ
عن أبي هريرة رضي الله عنه عن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال: تعرض الأعمال يوم الاثنين والخميس، فأحب أن يعرض عملي وأنا صائم.  رواه الترمذي رواه مسلم بغير ذكر الصوم
আবু হুরাইরা রা. থেকে বর্ণিত যে রাসূলুল্লাহ সা.  বলেছেনঃ সোমবার ও বৃহস্পতিবার বান্দার আমল আল্লাহর দরবারে পেশ করা হয়। কাজেই আমি পছন্দ করি যখন আমার আমল পেশ করা হবে তখন আমি রোযাদার থাকব (বর্ণনায়: মুসলিম ও তিরমীজি)
উল্লেখিত হাদীস দ্বারা কয়েকটি বিষয় স্পষ্টভাবে বুঝে আসে। তা হল:
দুই. যদি জন্মদিবসের কারণে রোযা রাখার বিধান হত তাহলে  শুধু সোমবারে রোজা রাখা সুন্নাত হত। কিন্তু তা হয়নিবরং বৃহস্পতিবার ও সোমবার সপ্তাহে দুদিন রোযা রাখাকে সুন্নাত করা হয়েছে। তাই এ রোযার কারণ শুধু জন্ম দিবস নয়।
তিন. এ দু দিনে রোযা সুন্নাত হওয়ার কারণ হল আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের কাছে আমল পেশ হওয়া।
চার. সোমবারের ফজীলত দু কারণে। জন্মদিন ও নবুওয়াত প্রাপ্তি বা কুরআন নাযিল। শুধু জন্ম দিন হিসেবে নয়।
পাঁচ. রাসুলে কারীম সা.  তার জন্মদিন সোমবারে ঈদ পালন করতে বলেননি বরং ঈদের বিরোধীতা করে রোযা রাখতে বলেছেন।
ছয়. রোযা হল ঈদের বিপরীত। রোযা রাখলে সে দিন ঈদ করা যায় নাঈদ ও রোযা কোন দিন এক তারিখে হয় না। হাদীসের দাবি হল রাসূলুল্লাহ সা. এর জন্মদিনে রোযা রাখা। কিন্তুরোযা না রেখে তার বিপরীতে পালন করার পেছনে কি যুক্তি থাকতে পারে?
সাত. তর্কের খাতিরে যদি ধরে নেয়া যায় যে এ হাদীসটিতে রাসূলের জন্মদিন পালনের ইঙ্গিত রয়েছে। তাহলে হাদীস অনুযায়ী প্রতি সোমবার কেন ঈদ পালন করা হচ্ছে নাসোমবারেও নয় বরং ঈদ পালন করা হচ্ছে  বছরে একবার রবিউল আউয়াল মাসের ১২ তারিখে। সে দিন সোমবার না হলেও পালিত হয়। এ হাদীসে কি ১২ই রবিউল আউয়ালে জন্মদিন পালন করতে বলা হয়েছে?
আট. যদি তর্কের খাতিরে ধরে নেয়া হয় উল্লেখিত হাদীসটি রাসূল সা.  এর জন্মদিন পালন করতে উৎসাহিত করা হয়েছে তা হলে আমি বলব হ্যাঁ,হাদীসটিতে  জন্মদিবস কিভাবে পালন করতে হবে তাও বলে দেয়া হয়েছে। তা হল ঐ দিনে রোযা রাখা। কিন্তু ঐ দিনে রোযা না রেখে বেশী খাওয়া দাওয়া করা হয়। ঈদ নাম দিয়ে রোযা রাখার বিরোধিতা করা হয়। তা হলে তাদের কাছে রোযা রাখার সুন্নাতের চেয়ে খাওয়া-দাওয়া বেশী প্রিয়মনে রাখা উচিত প্রেম  মুহাব্বাতের সত্যিকার প্রমাণ হল ত্যাগ ও কুরবানী করাউপোস থাকাকষ্ট স্বীকার করা। খাওয়া-দাওয়া ও আমোদ-ফুর্তি নয়। মুখে নবী প্রেমের দাবি ও কাজ-কর্মে তার আদর্শের বিরোধিতা করার নাম কখনো মুহাব্বাত হতে পারে না। বরং বলা চলে ধোকাবাজি।
আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আমাদের সকলকেই আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের প্রতি ভালবাসা এবং জীবনের সকল ক্ষেত্রে তাদের আনুগত্য করার তাওফীক দান করুন!
মূল: আব্দুল্লাহ শহীদ আব্দুর রহমান
Collected from: http://www.islamhouse.com/

be Organized by Holy Islam 
O.H.I 
ভিজিট করুন  

Sunday, January 29, 2012

ইসলামে ঈদ কয়টি ?


   السلام عليكم
দৈনন্দিন পথনির্দেশিকা
ইসলামে ঈদ কয়টি ?

                      


ইসলামে ঈদ হল দুটি। ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা।
عن أنس بن مالك رضي الله عنهما قال : قدم رسول الله صلى الله عليه وسلم المدينة، ولهم يومان يلعبون فيهما، قال: ما هذان اليومان؟ قالوا كنا نلعب فيهما في الجاهلية، قال رسول الله صلى الله عليه وسلم : قد أبدلكم الله خيراً منهما: يوم الأضحى ويوم الفطر - رواه أبو داود

সাহাবী আনাস বিন মালিক রাঃ থেকে বর্ণিত তিনি বলেনঃ রাসূলে কারীম সা.  যখন মদীনায় আসলেন তখন দেখলেন বছরের দুটি দিনে মদীনাবাসীরা আনন্দ-ফুর্তি করছে। তিনি জিজ্ঞেস করলেন এ দিন দুটো কি তারা বলল যে আমরা ইসলামপূর্ব মুর্খতার যুগে এ দুদিন আনন্দ-ফুর্তি করতাম। রাসূলুল্লাহ সা. বললেনঃ আল্লাহ তাআলা এ দুদিনের পরিবর্তে এর চেয়ে উত্তম দুটো দিন তোমাদের দিয়েছেন। তা হল ঈদুল আজহা ও ঈদুল ফিতর। ( আবু দাউদ)

ইসলামে ঈদ শুধু দু’টি এ বিষয়টি শুধু সহীহ হাদীস দ্বারাই প্রমাণিত নয়তা রবং ইজমায়ে উম্মত  দ্বারাও প্রতিষ্ঠিত। যদি কেউ ইসলামে তৃতীয় আরেকটি  ঈদের প্রচলন করে তবে তা কখনো গ্রহণযোগ্য হবে না। বরং তা দ্বীনের মধ্যে একটা বেদআত ও বিকৃতি বলেই গণ্য হবে। যখন কেউ বলে সকল ঈদের সেরা ঈদ- ঈদে মীলাদ’ তখন স্বাভাবিক ভাবেই এর অর্থ হয় ইসলামে যতগুলো ঈদ আছে তার মধ্যে ঈদে মীলাদ হল শ্রেষ্ঠ ঈদ। কিভাবে এটা সম্ভব যে ঈদকে আল্লাহ ও তার রাসূল স্বীকৃতি দেননি। সাহাবায়ে কেরামতাবেয়ীন ও ইমামগন যে ঈদকে প্রত্যাখ্যান করেছেন তা ইসলামে শ্রেষ্ঠ ঈদ বলে বিবেচিত হতে পারে কি ভাবে কোন ভাবেই নয়। আর যে ঈদ আল্লাহর রাসূল সা. প্রচলন করে গেলেন তা শ্রেষ্ঠ হবে না। এটা কিভাবে মেনে নেয়া যায়কোন ভাবেই নয়। তবে শুধু একদিক থেকে মেনে নেয়া যায়আর তা হল যত ভূয়া ও ভেজাল ঈদ আছে তার মধ্যে শ্রেষ্ঠ হল এই ঈদ!

তা সত্ত্বেও যদি ঈদ পালন করতেই হয় তবে তা ১২ ই রবিউল আউয়াল তারিখে না করে ৯ ই রবিউল আউয়ালে করা যেতে পারে। তাহলে অন্তত সাইয়েদুল মুরসালীন সা.  এর ইন্তেকাল দিবসে ঈদ পালন করার মত ধৃষ্ঠতা ও বেয়াদবির পরিচয় দেয়া হবে না। অবশ্য এটাও কিন্তু বেদআত বলে গণ্য হবে।
সার কথা ১২ই রবিউল আউয়ালে ঈদে-মীলাদ উদযাপন করা শরীয়ত বিরোধী কাজ। এ ধরণের কাজ হতে যেমন নিজেদের বাঁচাতে হবে তেমনি অন্যকে বিরত রাখার চেষ্টা করতে হবে।

যে কারণে ঈদে মীলাদুন্নবী পালন করা যাবে না
প্রথমতঃ
ইসলাম পরিপূর্ণ ধর্ম। কুরআন ও হাদীসের কোথাও ঈদে-মীলাদ পালন করতে বলা হয়নি। রাসূলে কারীম সা.  এর সাহাবায়ে কেরাম বা তাবেয়ীনগন কখনো এটা পালন করেননি। তাই এটা বেদআত ও গোমরাহী।
রাসূলুল্লাহ সা.  ইরশাদ করেনঃ
عن عائشة رضي الله عنها قالت قال رسول الله صلى الله عليه وسلم : من أحدث في أمرنا هذا ما ليس منه فهو رد- أخرجه البخاري ومسلم

আমাদের এ ধর্মে যে নতুন কোন বিষয় প্রচলন করবে তা প্রত্যাখ্যাত হবে। (বুখারী ও মুসলিম।)
তিনি আরো ইরশাদ করেনঃ
إياكم ومحدثات الأمور، فإن كل محدثة بدعة وكل بدعة ضلالة  -رواه أبو داود و الترمذي وابن ماجه عن عرباض بن سارية.
সাবধান ! ধর্মে প্রবর্তিত নতুন বিষয় থেকে সর্বদা দূরে থাকবে। কেননা নব-প্রবর্তিত প্রতিটি বিষয় হল বেদআত ও প্রতিটি বেদআত হল পথভ্রষ্ঠতা। (আবু দাউদতিরমিজীইবনে মাজামুসনাদে আহমাদ)

দ্বিতীয়তঃ
ঈদে মীলাদুন্নবী হল খৃষ্টানদের বড় দিনহিন্দুদের জন্মাষ্ঠমী ও বৌদ্ধদের বৌদ্ধ-পূর্ণিমার অনুকরণ। ধর্মীয় বিষয়ে তাদের আচার-অনুষ্ঠানের বিরোধিতা করা ঈমানের দাবী। অথচ ঈদে-মীলাদ পালনের মাধ্যমে তাদের বিরোধিতা না করে অনুসরণ করা হয়।

তৃতীয়তঃ
সর্বসম্মতভাবে ১২ ই রবিউল আউয়াল নবী আকরাম সা.  এর ইন্তেকাল দিবস। এতে কারো দ্বিমত নেই ও কোন সন্দেহ নেই। এ দিনে মুসলিম উম্মাহ ও সাহাবায়ে কেরাম আল্লাহর রাসূল সা. এর ইন্তেকালের শোকে পাথর হয়ে হয়ে গিয়েছিলেন। এসব জেনে-শুনে ঠিক এ দিনটিতে ঈদ তথা আনন্দ-উৎসব পালন করা চরম বেঈমানী ও নবীর শানে বেয়াদবী ভিন্ন অন্য কিছু হতে পারে না।

চতুর্থতঃ
মীলাদুন্নবী পালন করে অনেকে মনে করে নবী কারীম সা. এর প্রতি তাদের দায়ীত্ব-কর্তব্য আদায় হয়ে গেছে। তাই তারা রাসূলে কারীম সা.এর সীরাত ও আদর্শের প্রতি কোন খেয়াল রাখেন না। বরং তারা সীরাতুন্নবী নামের শব্দটাও বরদাশ করতে রাজী নয়।

পঞ্চমতঃ
আল্লাহ ও তার রাসূল সা. কর্তৃক নির্ধারিত ইসলামের দুঈদের সাথে তৃতীয় আরেকটি ঈদ সংযোজন করা ইসলাম-ধর্ম বিকৃত করার একটা অপচেষ্টা ছাড়া আর কিছু নয়। 
মূল: আব্দুল্লাহ শহীদ আব্দুর রহমান
Collected from: http://www.islamhouse.com/


be Organized by Holy Islam O.H.I 
ভিজিট করুন