Sunday, July 22, 2012

রামাদান ম্যানুয়াল-২


السلام عليكم


দৈনন্দিন পথনির্দেশিকা

রামাদান ম্যানুয়াল-২

বিষয়ভিত্তিক আল-কোরআন ও আল-হাদীস অধ্যয়ন
বিষয়: পাক কালিমা আর নাপাক কালিমা
সূরা ইবরাহীম : ২৪-২৭
أَلَمْ تَرَ كَيْفَ ضَرَبَ اللَّهُ مَثَلاً كَلِمَةً طَيِّبَةً كَشَجَرةٍ طَيِّبَةٍ أَصْلُهَا ثَابِتٌ وَفَرْعُهَا فِي السَّمَاء (২৪) تُؤْتِي أُكُلَهَا كُلَّ حِينٍ بِإِذْنِ رَبِّهَا وَيَضْرِبُ اللَّهُ الأَمْثَالَ لِلنَّاسِ لَعَلَّهُمْ يَتَذَكَّرُونَ (২৫) وَمَثلُ كَلِمَةٍ خَبِيثَةٍ كَشَجَرَةٍ خَبِيثَةٍ اجْتُثَّتْ مِن فَوْقِ الأَرْضِ مَا لَهَا مِن قَرَارٍ (২৬) يُثَبِّتُ اللَّهُ الَّذِينَ آمَنُواْ بِالْقَوْلِ الثَّابِتِ فِي الْحَيَاةِ الدُّنْيَا وَفِي الآخِرَةِ وَيُضِلُّ اللَّهُ الظَّالِمِينَ وَيَفْعَلُ اللَّهُ مَا يَشَاء (২৭)
২৪) তুমি কি দেখছো না আল্লাহ কালেমা তাইয়্যেবার ৩৪ উপমা দিয়েছেন কোন জিনিসের সাহায্যেএর উপমা হচ্ছে যেমন একটি ভালো জাতের গাছযার শিকড় মাটির গভীরে প্রোথিত এবং শাখা-প্রশাখা আকাশে পৌঁছে গেছে। ৩৫
২৫) প্রতি মুহূর্তে নিজের রবের হুকুমে সে ফলদান করে। ৩৬ এ উপমা আল্লাহ এ জন্য দেন যাতে লোকেরা এর সাহায্যে শিক্ষা লাভ করতে পারে। 
২৬) অন্যদিকে অসৎ বাক্যের ৩৭ উপমা হচ্ছেএকটি মন্দ গাছযাকে ভূপৃষ্ঠ থেকে উপড়ে দূরে নিক্ষেপ করা হয়যার কোন স্থায়িত্ব নেই। ৩৮
২৭) ঈমানদারদেরকে আল্লাহ একটি শাশ্বত বাণীর ভিত্তিতে দুনিয়া ও আখেরাত উভয় স্থানে প্রতিষ্ঠা দান করেন। ৩৯ আর জালেমদেরকে আল্লাহ পথভ্রষ্ট করেন। ৪০ আল্লাহ যা চান তাই করেন। 
আয়াত সমূহের ব্যাখ্যা
৩৪.কালিমা তাইয়্যেবা” র শাব্দিক অর্থ পবিত্র কথা” কিন্তু এ শব্দের মাধ্যমে যে তাৎপর্য গ্রহণ করা হয়েছে তা হচ্ছেএমন সত্য কথা এবং এমন পরিচ্ছন্ন বিশ্বাস যা পুরোপুরি সত্য ও সরলতার ওপর প্রতিষ্ঠিত। এ উক্তি ও আকীদা কুরআন মজীদের দৃষ্টিতে অপরিহার্যভাবে এমন একটি কথা ও বিশ্বাস হতে পারে যার মধ্যে রয়েছে তাওহীদের স্বীকৃতিনবীগণ ও আসমানী কিতাবসমূহের স্বীকৃতি এবং আখেরাতের স্বীকৃতি। কারণ কুরআন এ বিষয়গুলোকেই মৌলিক সত্য হিসেবে পেশ করে।
৩৫. অন্য কথায় এর অর্থ হলোপৃথিবী থেকে আকাশ পর্যন্ত সমগ্র বিশ্বব্যবস্থা যেহেতু এমন একটি সত্যের ওপর প্রতিষ্ঠিত যার স্বীকৃতি একজন মুমিন তার কালিমা তাইয়্যেবার মধ্যে দিয়ে থাকেতাই কোন স্থানের প্রাকৃতিক আইন এর সাথে সংঘর্ষ বাধায় নাকোন বস্তুর আসলভাব ও প্রাকৃতিক গঠন একে অস্বীকার করে না এবং কোথাও কোন প্রকৃত সত্য ও সততা এর সাথে বিরোধ করে না। তাই পৃথিবী ও তার সমগ্র ব্যবস্থা তার সাথে সহযোগিতা করে এবং আকাশ তথা সমগ্র মহাশূন্য জগত তাকে স্বাগত জানায়।
৩৬. অর্থাৎ সেটি একটি ফলদায়ক ও ফলপ্রসূ কালিমা। কোন ব্যক্তি বা জাতি তার ভিত্তিতে জীবন ব্যবস্থা গড়ে তুললে প্রতি মুহূর্তে সে তার সূফল লাভ করতে থাকে। সেটি চিন্তা ধারায় পরিপক্কতা ও পরিচ্ছন্নতাস্বভাবে প্রশান্তিমেজাজে ভারসাম্যএ জীবন ধারায় মজবুতীচরিত্রে পবিত্রতাআত্মায় প্রফুল্লতা ও স্নিগ্ধতাশরীরে পবিত্রতা ও পরিচ্ছন্নতাআচরণে মাধুর্যব্যবহার ও লেনদেনে সততাকথাবার্তায় সত্যবাদিতাওয়াদা ও অংগীকারে দৃঢ়তাসামাজিক জীবন যাপনে সদাচারকৃষ্টিতে ঔদার্য ও মহত্বসভ্যতায় ভারসাম্যঅর্থনীতিতে আদল ও ইনসাফরাজনীতিতে বিশ্বস্ততাসন্ধিতে আন্তরিকতা এবং চুক্তি ও অংগীকারে বিশ্বস্ততা সৃষ্টি করে। সেটি এমন একটি পরশ পাথর যার প্রভাব কেউ যথাযথভাবে গ্রহণ করলে খাঁটি সোনায় পরিণত হয়।
৩৭. এটি কালিমা তাইয়্যেবার বিপরীত শব্দ। যদিও প্রতিটি সত্য বিরোধী ও মিথ্যা কথার ওপর এটি প্রযুক্ত হতে পারে তবুও এখানে এ থেকে এমন প্রতিটি বাতিল আক্বীদা বুঝায়যার ভিত্তিতে মানুষ নিজের জীবন ব্যবস্থা গড়ে তোলে। এ বাতিল আক্বীদা নাস্তিক্যবাদনিরেশ্বরবাদধর্মদ্রোহিতাঅবিশ্বাসশিরকপৌত্তলিকতা অথবা এমন কোন চিন্তাধারাও হতে পারে যা নবীদের মাধ্যমে আসেনি।
৩৮. অন্য কথায় এর অর্থ হলোবাতিল আক্বীদা যেহেতু সত্য বিরোধী তাই প্রাকৃতিক আইন কোথাও তার সাথে সহযোগিতা করে না। বিশ্ব জগতের প্রতিটি অণুকণিকা তাকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করে। পৃথিবী ও আকাশের প্রতিটি বস্তু তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানায়। জমিতে তার বীজ বপন করার চেষ্টা করলে জমি সবসময় তাকে উদ্গীরণ করার জন্য তৈরী থাকে। আকাশের দিকে তার শাখা প্রশাখা বেড়ে উঠতে থাকলে আকাশ তাদেরকে নিচের দিকে ঠেলে দেয়। পরীক্ষার খাতিরে মানুষকে যদি নির্বাচন করার স্বাধীনতা ও কর্মের অবকাশ না দেয়া হতো তাহলে এ অসৎ জাতের গাছটি কোথাও গজিয়ে উঠতে পারতো না। কিন্তু যেহেতু মহান আল্লাহ আদম সন্তানকে নিজের স্বাধীন ইচ্ছা ও প্রবণতা অনুযায়ী কাজ করার সুযোগ দান করেছেনতাই যেসব নির্বোধ লোক প্রাকৃতিক আইনের বিরুদ্ধে লড়ে এ গাছ লাগাবার চেষ্টা করে তাদের শক্তি প্রয়োগের ফলে জমি একে সামান্য কিছু জায়গা দিয়েও দেয়বাতাস ও পানি থেকে সে কিছু না কিছু খাদ্য পেয়েই যায় এবং শূন্যও তার ডালপালা ছড়াবার জন্য অনিচ্ছাকৃতভাবে কিছু জায়গা তাকে দিতে প্রস্তুত হয়ে যায়। কিন্তু যতদিন এ গাছ বেঁচে থাকে ততদিন তিক্তবিস্বাদ ও বিষাক্ত ফল দিতে থাকে এবং অবস্থার পরিবর্তনের সাথে সাথেই আকস্মিক ঘটনাবলীর এক ধাক্কাই তাকে সমূলে উৎপাটিত করে।
পৃথিবীর ধর্মীয়নৈতিকচিন্তাগত ও তামাদ্দুনিক ইতিহাস অধ্যয়নকারী প্রত্যেক ব্যক্তিই কালিমায়ে তাইয়্যেবা তথা ভালো কথা এবং মন্দ কথার এ পার্থক্য সহজে অনুভব করতে পারে। সে দেখবে ইতিহাসের শুরু থেকে আজ পর্যন্ত ভালো কথা একই থেকেছে। কিন্তু মন্দ কথা সৃষ্টি হয়েছে অসংখ্য। ভালো কথাকে কখনো শিকড়শুদ্ধ উপড়ে ফেলা যায়নি। কিন্তু মন্দ কথার তালিকা হাজারো মৃত কথার নামে ভরে আছে। এমনকি তাদের অনেকের অবস্থা হচ্ছে এই যেআজ ইতিহাসের পাতা ছাড়া আর কোথাও তাদের নাম নিশানাও পাওয়া যায় না। স্ব স্ব যুগে যেসব কথার প্রচন্ড দাপট ছিল আজ সে সব কথা উচ্চারিত হলে মানুষ এই ভেবে অবাক হয়ে যায় যেএকদিন এমন পর্যায়ের নির্বুদ্ধিতাও মানুষ করেছিল।
তারপর ভালো কথাকে যখনই যে জাতি বা ব্যক্তি যেখানেই গ্রহণ করে সঠিক অর্থে প্রয়োগ করেছে সেখানেই তার সমগ্র পরিবেশ তার সুবাসে আমোদিত হয়েছে। তার বরকতে শুধুমাত্র সেই ব্যক্তি বা জাতিই সমৃদ্ধ হয়নি বরং তার আশপাশের জগতও সমৃদ্ধ হয়েছে। কিন্তু কোন মন্দ কথা যেখানেই ব্যক্তি বা সমাজ জীবনে শিকড় গেড়েছে সেখানেই তার দুর্গন্ধে সমগ্র পরিবেশ পুতিগন্ধময় হয়ে উঠেছে এবং তার কাঁটার আঘাত থেকে তার মান্যকারীরা নিরাপদ থাকেনি এবং এমন কোন ব্যক্তিও নিরাপদ থাকতে পারেনি যে তার মুখোমুখি হয়েছে।
এ প্রসংগে একথা উল্লেখ্য যেএখানে উপমার মাধ্যমে ১৮ আয়াতে যে বিষয়টি বর্ণনা করা হয়েছিল সেটিই বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। ১৮ আয়াতে বলা হয়েছিলনিজের রবের সাথে যারা কুফরী করে তাদের দৃষ্টান্ত এমন ছাই-এর মতো যাকে ঝঞ্ঝা বিক্ষুব্ধ দিনের প্রবল বাতাস উড়িয়ে দিয়েছে। এ একই বিষয়বস্তু ইতিপূর্বে সূরা আর রাদ-এর ১৭ আয়াতে অন্যভাবে বন্যা ও গলিত ধাতুর উপমার সাহায্যে বর্ণনা করা হয়েছে।
৩৯. অর্থাৎ এ কালিমার বদৌলতে তারা দুনিয়ায় একটি স্থায়ী দৃষ্টিভংগীএকটি শক্তিশালী ও সুগঠিত চিন্তাধারা এবং একটি ব্যাপকভিত্তিক মতবাদ ও জীবন দর্শন লাভ করে। জীবনের সকল জটিল গ্রন্থীর উন্মোচনে এবং সকল সমস্যার সমাধানে তা এমন এক চাবির কাজ করে যা দিয়ে সকল তালা খোলা যায়। তার সাহায্যে চরিত্র মজবুত এবং নৈতিক বৃত্তিগুলো সুগঠিত হয়। তাকে কালের আবর্তন একটুও নড়াতে পারে না। তার সাহায্যে জীবন যাপনের এমন কতগুলো নিরেট মূলনীতি পাওয়া যায় যা একদিকে তাদের হৃদয়ে প্রশান্তিও মস্তিষ্কে নিশ্চিন্ততা এনে দেয় এবং অন্যদিকে তাদেরকে প্রচেষ্টা ও কর্মের পথে দিশেহারা হয়ে ঘুরে বেড়াবার দ্বারে দ্বারে ঠোকর খাওয়ার এবং অস্থিরতার শিকার হওয়ার হাত থেকে বাঁচায়। তারপর যখন তারা মৃত্যুর সীমানা পার হয়ে পরলোকের সীমান্তে পা রাখে তখন সেখানে তারা বিস্ময়াভিভূতহতবাক ও পেরেশান হয় না। কারণ সেখানে তাদের প্রত্যাশা অনুযায়ী সবকিছু হতে থাকে। সে জগতে তারা এমনভাবে প্রবেশ করতে থাকে যেন সেখানকার আচার-অনুষ্ঠান ও রীতিনীতি সম্পর্কে তারা পূর্বাহ্নেই অবহিত ছিল। সেখানে এমন কোন পর্যায় উপস্থাপিত হয়না যে সম্পর্কে তাদের পূর্বাহ্নে খবর দেয়া হয়নি এবং যে জন্য তারা পূর্বেই প্রস্তুতি পর্ব সম্পন্ন করে রাখেনি। তাই সেখানে প্রত্যেক মন্যিলই তারা দৃঢ় পদে অতিক্রম করে যায়। পক্ষান্তরে কাফের ব্যক্তি মৃত্যুর পরপরই নিজের প্রত্যাশার সম্পূর্ণ বিপরীত অকস্মাৎ এক ভিন্ন অবস্থার মুখোমুখি হয়। তার অবস্থা মুমিন থেকে সম্পূর্ণ আলাদা হয়।
৪০. অর্থাৎ যেসব জালেম কালিমায়ে তাইয়্যেবা বাদ দিয়ে কোন মন্দ কালেমার অনুসরণ করে আল্লাহ তাদের বুদ্ধিবৃত্তি ও মন-মানসকে দিশেহারা করে দেন এবং তাদের প্রচেষ্টাবলীর মধ্যে বিশৃংখলা সৃষ্টি করেন। তারা কোন দিক দিয়েও চিন্তা কর্মের সঠিক পথে পাড়ি জমাতে পারে না। তাদের কোন তীরও সঠিক লক্ষ্যস্থলে লাগে না।

বিষয়ভিত্তিক হাদীস: ০২

عَنْ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم قَالَ أُمِرْت أَنْ أُقَاتِلَ النَّاسَ حَتَّى يَشْهَدُوا أَنْ لَا إلَهَ إلَّا اللَّهُ وَأَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللَّهِ، وَيُقِيمُوا الصَّلَاةَ، وَيُؤْتُوا الزَّكَاةَ؛ فَإِذَا فَعَلُوا ذَلِكَ عَصَمُوا مِنِّي دِمَاءَهُمْ وَأَمْوَالَهُمْ إلَّا بِحَقِّ الْإِسْلَامِ، وَحِسَابُهُمْ عَلَى اللَّهِ تَعَالَىرَوَاهُ الْبُخَارِيُّ وَمُسْلِمٌ
ইবনে উমার রাদিয়াল্লাহু আনহুমা হতে বর্ণিতরাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: আমাকে হুকুম দেয়া হয়েছে ততক্ষণ পর্যন্ত মানুষের সঙ্গে লড়াই করতে যতক্ষণ পর্যন্ত না তারা এ কথার সাক্ষ্য দেয় যেআল্লাহ ছাড়া আর কোন সত্য ইলাহ নেই এবং মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আল্লাহর রাসূল। আর তারা সালাত কায়েম করে ও যাকাত দেয়। যদি তারা এরূপ করে তবে তারা আমার হাত থেকে নিজেদের জীবন ও সম্পদ রক্ষা করে নেবেঅবশ্য ইসলামের হক যদি তা দাবী করে তবে আলাদা কথাআর তাদের হিসাব নেয়ার দায়িত্ব আল্লাহর উপর ন্যস্ত। [বুখারী ও মুসলিম]
নির্বাচিত
আয়াত মুখস্তকরণ
মুখস্ত করণ: প্রথম আয়াত
১-৩ রামাদান: ৩ দিন

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لاَ يَسْخَرْ قَومٌ مِّن قَوْمٍ عَسَى أَن يَكُونُوا خَيْرًا مِّنْهُمْ وَلا نِسَاءٌ مِّن نِّسَاءٍ عَسَى أَن يَكُنَّ خَيْرًا مِّنْهُنَّ وَلا تَلْمِزُوا أَنفُسَكُمْ وَلا تَنَابَزُوا بِالأَلْقَابِ بِئْسَ الاِسْمُ الْفُسُوقُ بَعْدَ الإِيمَانِ وَمَن لَّمْ يَتُبْ فَأُوْلَئِكَ هُمُ الظَّالِمُونَ (১১)
 হে ঈমানদারগণপুরুষরা যেন অন্য পুরুষদের বিদ্রুপ না করে। হতে পারে তারাই এদের চেয়ে উত্তম। আর মহিলারাও যেন অন্য মহিলাদের বিদ্রুপ না করে। হতে পারে তারাই এদের চেয়ে উত্তম। তোমরা একে অপরকে বিদ্রুপ করো না এবং পরস্পরকে খারাপ নামে ডেকো না। ঈমান গ্রহণের পর গোনাহর কাজে প্রসিদ্ধি লাভ করা অত্যন্ত জঘন্য ব্যাপার। যারা এ আচরণ পরিত্যাগ করেনি তারাই জালেম। সূরা হুজুরাত: ১১

নির্বাচিত
আল-হাদীস মুখস্তকরণ
মুখস্থকরণ: প্রথম হাদীস
১-৯ রামাদান

عَنْ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ أَيْضًا قَالَ " بَيْنَمَا نَحْنُ جُلُوسٌ عِنْدَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم ذَاتَ يَوْمٍ، إذْ طَلَعَ عَلَيْنَا رَجُلٌ شَدِيدُ بَيَاضِ الثِّيَابِ، شَدِيدُ سَوَادِ الشَّعْرِ، لَا يُرَى عَلَيْهِ أَثَرُ السَّفَرِ، وَلَا يَعْرِفُهُ مِنَّا أَحَدٌحَتَّى جَلَسَ إلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم . فَأَسْنَدَ رُكْبَتَيْهِ إلَى رُكْبَتَيْهِ، وَوَضَعَ كَفَّيْهِ عَلَى فَخْذَيْهِ، وَقَالَيَا مُحَمَّدُ أَخْبِرْنِي عَنْ الْإِسْلَامِفَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم الْإِسْلَامُ أَنْ تَشْهَدَ أَنْ لَا إلَهَ إلَّا اللَّهُ وَأَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللَّهِ، وَتُقِيمَ الصَّلَاةَ، وَتُؤْتِيَ الزَّكَاةَ، وَتَصُومَ رَمَضَانَ، وَتَحُجَّ الْبَيْتَ إنْ اسْتَطَعْت إلَيْهِ سَبِيلًاقَالَصَدَقْت . فَعَجِبْنَا لَهُ يَسْأَلُهُ وَيُصَدِّقُهُقَالَفَأَخْبِرْنِي عَنْ الْإِيمَانِقَالَأَنْ تُؤْمِنَ بِاَللَّهِ وَمَلَائِكَتِهِ وَكُتُبِهِ وَرُسُلِهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ، وَتُؤْمِنَ بِالْقَدَرِ خَيْرِهِ وَشَرِّهِقَالَصَدَقْتقَالَفَأَخْبِرْنِي عَنْ الْإِحْسَانِقَالَأَنْ تَعْبُدَ اللَّهَ كَأَنَّك تَرَاهُ، فَإِنْ لَمْ تَكُنْ تَرَاهُ فَإِنَّهُ يَرَاكقَالَفَأَخْبِرْنِي عَنْ السَّاعَةِقَالَمَا الْمَسْئُولُ عَنْهَا بِأَعْلَمَ مِنْ السَّائِلِقَالَفَأَخْبِرْنِي عَنْ أَمَارَاتِهَا؟ قَالَأَنْ تَلِدَ الْأَمَةُ رَبَّتَهَا، وَأَنْ تَرَى الْحُفَاةَ الْعُرَاةَ الْعَالَةَ رِعَاءَ الشَّاءِ يَتَطَاوَلُونَ فِي الْبُنْيَانِثُمَّ انْطَلَقَ، فَلَبِثْنَا مَلِيًّا، ثُمَّ قَالَيَا عُمَرُ أَتَدْرِي مَنْ السَّائِلُ؟قَلَتْاللَّهُ وَرَسُولُهُ أَعْلَمُقَالَفَإِنَّهُ جِبْرِيلُ أَتَاكُمْ يُعَلِّمُكُمْ دِينَكُم". رَوَاهُ مُسْلِمٌ

উমার (রা:) হতে বর্ণিত। তিনি বলেনএকদিন আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট বসেছিলামএমন সময় হঠাৎ এক ব্যক্তি আমাদের সামনে উপস্থিত হয়যার কাপড় ছিল ধবধবে সাদাচুল ছিল ভীষণ কালোতার মাঝে ভ্রমণের কোন লক্ষণ পরিলক্ষিত হচ্ছিল না। আমাদের মধ্যে কেউ তাকে চিনতে পারেনি। সে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকটে গিয়ে বসেনিজের হাঁটু তার হাঁটুর সঙ্গে মিলিয়ে নিজের হাত তার উরুতে রেখে বললেন: হে মুহাম্মাদআমাকে ইসলাম সম্পর্কে বলুন
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন: ইসলাম হচ্ছে এই- তুমি সাক্ষ্য দাও যেআল্লাহ ছাড়া আর কোন সত্য ইলাহ্ নেই এবং মুহাম্মাদ (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আল্লাহর রাসূলসালাত প্রতিষ্ঠা করযাকাত আদায় কররামাদানে সওম সাধনা কর এবং যদি সামর্থ থাকে তবে (আল্লাহর) ঘরের হজ্জ কর।
তিনি (লোকটি) বললেন: আপনি ঠিক বলেছেন। আমরা বিস্মিত হলামসে নিজে তার নিকট জিজ্ঞাসা করেছে আবার নিজেই তার জবাবকে ঠিক বলে ঘোষণা করছে। এরপর বলল: আচ্ছাআমাকে ঈমান সম্পর্কে বলুন
তিনি (রাসূল) বললেন: তা হচ্ছে এই- আল্লাহর ফিরিশতাগণতাঁর কিতাবসমূহতাঁর রাসূলগণ ও আখেরাতর উপর ঈমান আনা এবং তাকদীরের ভাল-মন্দের উপর ঈমান আনা
সে (আগন্তুক) বলল: আপনি ঠিক বলেছেন। তারপর বলল: আমাকে ইহসান সম্পর্কে বলুন
তিনি বলেন: তা হচ্ছে এই- তুমি এমনভাবে আল্লাহর ইবাদাত কর যেন তুমি আল্লাহকে দেখতে পাচ্ছআর তুমি যদি তাঁকে দেখতে না ও পাও তবে তিনি তোমাকে দেখছেন
সে (আগন্তুক) বলল: আমাকে কেয়ামত সম্পর্কে বলুন। তিনি (রাসূল) বললেন: যাকে জিজ্ঞাসা করা হচ্ছে সে জিজ্ঞাসাকারী অপেক্ষা বেশী কিছু জানে না। সে (আগন্তুক) বলল: আচ্ছাতার লক্ষণ সম্পর্কে বলুন
তিনি (রাসূল) বললেন: তা হচ্ছে এই- দাসী নিজের মালিককে জন্ম দেবেসম্পদ ও বস্ত্রহীন রাখালগণ উঁচু উঁচু প্রাসাদ তৈরি করে দম্ভ করবে
তারপর ঐ ব্যক্তি চলে যায়আর আমি আরো কিছুক্ষণ বসে থাকি। তখন তিনি (রাসূল) আমাকে বললেন: হে উমরপ্রশ্নকারী কে ছিলেনতুমি কি জানআমি বললাম: আল্লাহ ও তাঁর রাসূল অধিক ভাল জানেন। তিনি বললেন: তিনি হলেন জিবরীল। তোমাদেরকে তোমাদের দ্বীন শিক্ষা দিতে তোমাদের কাছে এসেছিলেন। [সহীহ মুসলিম]


be Organized by Holy Islam 

O.H.I