السلام عليكم
দৈনন্দিন পথনির্দেশিকা
রাসূলুল্লাহ যেভাবে হজ করেছেন-৪
হজ্জে উমরা করার আদেশ
৩৩- মারওয়া পাহাড়ে শেষ চক্করকালে তিনি বললেন, হে লোকসকল!
لَوْ أَنِّى اسْتَقْبَلْتُ مِنْ أَمْرِى مَا اسْتَدْبَرْتُ لَمْ أَسُقِ الْهَدْىَ وَجَعَلْتُهَا عُمْرَةً فَمَنْ كَانَ مِنْكُمْ لَيْسَ مَعَهُ هَدْىٌ فَلْيَحِلَّ وَلْيَجْعَلْهَا عُمْرَةً.
‘আমি পরে যা বুঝেছি তা যদি আগে বুঝতে পারতাম, তাহলে হাদী বা কুরবানীর পশু সাথে নিয়ে
আসতাম না এবং হজকে উমরায় পরিণত করতাম। তোমাদের মধ্যে যার সাথে হাদী বা পশু নেই সে যেন হালাল হয়ে যায় এবং এটাকে উমরায় পরিণত করে।’[1] অন্য বর্ণনায় এসেছে,
أَحِلُّوا مِنْ إِحْرَامِكُمْ فَطُوفُوا بِالْبَيْتِ وَبَيْنَ الصَّفَا وَالْمَرْوَةِ وَقَصِّرُوا ثُمَّ أَقِيمُوا حَلاَلاً حَتَّى إِذَا كَانَ يَوْمُ التَّرْوِيَةِ فَأَهِلُّوا بِالْحَجِّ وَاجْعَلُوا الَّتِي قَدِمْتُمْ بِهَا مُتْعَةًً.
‘বায়তুল্লাহ্র তাওয়াফ ও সাফা-মারওয়ার মাঝে সা‘ঈ করে তোমরা তোমাদের ইহরাম থেকে হালাল
হয়ে যাও এবং চুল ছোট করে ফেল। অতপর হালাল হয়ে
হজের ইহরাম বেঁধে তালবিয়া পাঠ কর। আর তোমরা যে হজের
ইহরাম করে এসেছ, সেটাকে তামাত্তুতে পরিণত কর।’[3]
৩৪- তখন সুরাকা ইব্ন মালিক ইব্ন জু‘শুম রা. মারওয়া পাহাড়ের পাদদেশে ছিলেন, তিনি দাঁড়িয়ে
বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ, আমাদের এই উমরায় রূপান্তর
করে তামাত্তু করা কি শুধু এ বছরের জন্য নাকি সব সময়ের জন্য? তখন নবী ﷺ দু’হাতের
আঙ্গুলগুলো পরস্পরের মধ্যে প্রবেশ করিয়ে বললেন,
دَخَلَتِ الْعُمْرَةُ فِى الْحَجِّ إِلَى يَوْمِ الْقِيَامَةِ ، لاَ بَلْ لأَبَدٍ أَبَدٍ، لاَ بَلْ لأَبَدٍ أَبَدٍ،
‘হজের ভেতরে উমরা কিয়ামত দিন পর্যন্ত প্রবিষ্ট হয়েছে। না, বরং তা সবসময়ের জন্য, না, বরং তা সবসময়ের জন্য’ এ কথাটি তিনি তিনবার বললেন।’[4]
৩৫- সুরাকা ইব্ন মালিক রা. বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ, আমাদেরকে দীনের ব্যাখ্যা দিন, আমাদেরকে যেন এখনই সৃষ্টি করা হয়েছে (অর্থাৎ আমাদেরকে
সদ্যভূমিষ্ট সন্তানের ন্যায় দীনের তালীম দিন)। আজকের আমল কিসের ওপর ভিত্তি করে? কলম যা লিখে শুকিয়ে গিয়েছে এবং তাকদীর যে বিষয়ে অবধারিত হয়ে গিয়েছে, তার ভিত্তিতে? না কি ভবিষ্যতে রচিতব্য নতুন কোন বিষয়ের ভিত্তিতে?[5] তিনি বললেন,
لَا، بَل فِيْ مَا جَفَّتْ بِه الْأَقْلاَمُ وَجَرَتْ بِه اْلمَقَادِيْرُ.
‘না, বরং যা লিখে কলম শুকিয়ে গিয়েছে এবং যে ব্যাপারে তাকদীর নির্ধারিত হয়ে গিয়েছে, তা-ই তোমরা আমল করবে। তিনি বললেন, ‘তাহলে’[6] আর
আমলের দরকার কী? তখন রাসূলুল্লাহ ﷺ বললেন,
اعْمَلُوا فَكُلٌّ مُيَسَّرٌ ]لِمَا خُلِقَ لَهُ[[7]
‘তোমরা আমল করে যাও, তোমাদের কেউ যে জন্য সৃষ্ট হয়েছ তার জন্য সে কাজ করা সহজ করে দেয়া হয়েছে।’[8]
৩৬- জাবের রা. বলেন, ‘তিনি আমাদেরকে আদেশ দিলেন, আমরা হালাল হয়ে গেলে যেন হাদীর ব্যবস্থা করি।’[9] ‘আমাদের মধ্য থেকে এক উটে সাতজন অংশ নিতে পারে।’[10] ‘যার সাথে হাদী নেই সে যেন হজের সময়ে তিনদিন রোযা রাখে আর যখন নিজ পরিবারের নিকট অর্থাৎ দেশে ফিরে যাবে তখন যেন সাতদিন রোযা রাখে।’[11]
৩৭- ‘অতপর আমরা বললাম, কী হালাল হবে? তিনি বললেন,
চলবে...
[1]. সাহাবীদের মধ্যে যারা হাদী সঙ্গে নিয়ে আসেননি রাসূলুল্লাহ তাঁদেরকে উমরা করে হালাল হতে নির্দেশ দিয়েছেন,
যাতে তাদের হজ মুশরিকদের বিপরীত হয়। কেননা মুশরিকরা মনে করতো, হজের মাসসমূহে উমরা পালন
জঘন্যতম অপরাধ (বুখারী : ৭২৩০)।
[2]. ৮ যিলহজকে ইয়াওমুত তারবিয়া বলা হয়। ইয়াওমুত-তারবিয়া অর্থ পানি পান করানোর দিন। মিনায় পানি ছিল না
বলে এদিন হাজীরা
পানি পান করে নিতেন, সাথেও নিয়ে নিতেন এবং তাদের বাহন জন্তুগুলোকেও পানি
পান করাতেন। তাই এই দিনকে পান করানোর দিন বলা হয়। ইব্ন কুদামা, আল-মুগনী : ৩১৪।
[3]. বুখারী ও মুসলিম।
[6]. মুসনাদে আহমদ।
খারাপ লিখা থাকে, তবে
খারাপ কাজ করা তার জন্য সহজ করে দেয়া হবে।
[8]. মুসনাদে আহমদ।