দৈনন্দিন পথনির্দেশিকা
রামাদান ম্যানুয়েল-৭: সাহরির
উত্তম সময় কোনটি
ইবনে মাসউদ রা.
থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন
‘বেলালের আজান যেন তোমাদের কাউকে সাহরি খাওয়া থেকে বাধা না দেয়। কারণ তিনি
আজান দেন কিংবা (রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ডাকেন এবং ঘুমন্তদের জাগাতে। ফজর এই নয় যে, ‘এমন
বলল’ (ইয়াহয়া ইবনে সায়িদ আল কাত্তান এ কথা বলে নিজ হাতের তালুদ্বয়
একত্রিত করলেন) ‘আর এমন বলল’ (ইয়াহয়া
এ কথা বলে তর্জনীদ্বয় প্রসারিত করলেন।)
সাহল বিন সা‘দ রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
‘আমি সস্ত্রীক সাহরি করতাম তারপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম- এর পেছনে ফজরের সালাত আদায়ের জন্য তাড়াতাড়ি ছুটতাম।’
বুখারির রেওয়ায়েত
মতে, ‘অতপর
আমার তাড়াহুড়া হত যেন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সঙ্গে সিজদা পাই।’
জর বিন হুবাইশ
র. বলেন, আমি হুযায়ফার সঙ্গে সাহরি করলাম তারপর
আমরা ছুটলাম মসজিদ অভিমুখে, মসজিদে পৌঁছে দু’রাকাত সালাত আদায় করলাম। আমরা পৌঁছার মুহূর্তকাল পরেই জামাত দাঁড়িয়ে যায়।’
উল্লেখ্য যে, হাদিসে বর্ণিত ‘সালাতরতদের ফেরাতে’
বাক্যাংশের অর্থ হল, বেলাল রা. এ আজানের
মাধ্যমে তোমাদের জানান যে, ফজর আর বেশি দূরে নয় অতএব যেন তাহাজ্জুদরত
ব্যক্তি হালকা বিশ্রামে যান যাতে সতেজ দেহে ফজরের সালাতে অংশ নিতে পারেন অথবা যিনি
বিতর পড়েন নি বিতর পড়ে নিতে পারেন কিংবা ফজরের সালাতের জন্য ফজরের পূর্বক্ষণে পবিত্রতা
হাসিল বা এধরনের কোনো প্রয়োজন থাকলে তা মিটিয়ে নিতে পারেন।
আর ‘ঘুমন্তদের জাগাতে’ বাক্যাংশ দ্বারা বুঝানো হয়েছে- ঘুমন্তরা যেন ঘুম থেকে জেগে
ফজরের প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে পারে। যেমন- তাহাজ্জুদ পড়তে ইচ্ছুক সংক্ষিপ্ত তাহাজ্জুদ
আদায় করতে পারে, যে বিতর পড়ে নি সে বিতর পড়ে নিতে পারে,
যে রোজা রাখবে সে সাহরি খেয়ে নিতে পারে এবং যার অজু-গোসল বা ফজরের
পূর্ব মুহূর্তে যেসব প্রয়োজন সারতে হয় তা সম্পন্ন করতে পারে।
হাদিস থেকে যা শিখলাম
:
১. নবী সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং সাহাবায়ে কিরাম ফজরের একেবারে পূর্বলগ্নে সাহরি করতেন। এমনকি
তাদের কেউ কেউ বলেছেন, যে তারা এতোটা
বিলম্বে সাহরি খেতেন যে খাওয়া সংক্ষিপ্ত করে জামাত ধরার জন্য তাড়াতাড়ি ছুটতেন। সুতরাং
জানা গেল ফজরের একেবারে পূর্বলগ্নে সাহরি খাওয়া সুন্নত।
২. প্রয়োজনকালে
আহার গ্রহণের সময় তাড়াহুড়া করা জায়িজ। এ ব্যাপারে ইমাম বুখারি র. ‘সাহরি তাড়াতাড়ি করা তথা দ্রুত খাওয়া’ শিরোনামে একটি স্বতন্ত্র অধ্যায়ই কায়েম করেছেন। ইমাম মালেক র. আব্দুল্লাহ
বিন আবি বকর রা. হতে তিনি তার পিতা থেকে বর্ণনা করেছেন যে, আমরা রমজান মাসে রাতের সালাতে (ফজর) যেতাম আর আমাদের খাদেমদের ফজরের জামাত
ছুটে যাওয়ার আশংকায় তাড়া দিতাম।
তথ্যসুত্রঃ
. বুখারি : ৬৮২০, মুসলিম : ১০৯৩
. বুখারি : ৫৫৪
. বুখারি : ১৮২০, আবু ইয়া’লা : ৭৫৩৩
. নাসায়ি : ৪/১২৪
. প্রাগুক্ত : ৭/২০৪, আল মুফহিম : ৩/১৫৩
. সহি বুখারি : ২/৬৭৮, ফাতহুল বারি : ৪/১৩৭
. মুযাত্তা মালেক : ১/১১৬, বাইহাকি : ২/৪৯৭
Collected from islamhouse.com
O.H.I
For More Visit: