السلام عليكم
দৈনন্দিন পথনির্দেশিকা
রাসূলুল্লাহ যেভাবে হজ করেছেন-৮
মুযদালিফায় একসাথে দুই সালাত আদায় এবং সেখানে রাত্রি যাপন
৬৮- এভাবে তিনি মুযদালিফায় এলেন। অতপর এক আযান ও দুই ইকামতসহ মাগরিব ও ইশার
সালাত একসাথে আদায় করলেন এবং এ দুই সালাতের মাঝখানে তিনি কোন তাসবীহ বা নফল
সালাত আদায় করলেন না।
৬৯- এরপর রাসূলুল্লাহ (সা) শুয়ে পড়লেন। এভাবেই সুবহে সাদেক উদিত হল। ফজরের সময় সুস্পষ্ট হওয়ার পর (আওয়াল ওয়াক্তে)
আযান ও ইকামতের পর ফজরের সালাত আদায় করলেন।
মাশ‘আরে হারাম তথা মুযদালিফায় অবস্থান
৭১- এরপর তিনি কিবলামুখী হয়ে আল্লাহর কাছে দু‘আ করলেন। ‘অতপর আল্লাহর প্রশংসা করলেন।’[3] তাঁর মহত্ব, শ্রেষ্ঠত্ব ও একত্ববাদের ঘোষণা দিলেন। পূর্ব আকাশ পূর্ণ ফর্সা হওয়া পর্যন্ত
তিনি সেখানে উকূফ করলেন।
৭২- ‘তিনি বললেন,
قَدْ وَقَفْتُ هَهُنَا وَالْمُزْدَلِفَةُ كُلُّهَا مَوْقِفٌ
‘আমি এখানে উকূফ করেছি; তবে মুযদালিফার পুরোটাই উকূফের স্থান।’[4]
জামরায় কঙ্কর নিক্ষেপের উদ্দেশ্যে মুযদালিফা থেকে রওয়ানা
৭৩- অতপর তিনি সূর্য উঠার পূর্বেই ‘মুযদালিফা’[5] থেকে মিনার দিকে রওয়ানা হলেন।[6] ‘আর তিনি ছিলেন শান্ত ও সুস্থির।’[7]
চুল ও উজ্জ্বল ফর্সা চেহারার অধিকারী।
৭৫- রাসুলূল্লাহ (সা) যখন মিনার দিকে রওয়ানা হলেন। তখন তাঁর কাছ দিয়ে কতিপয় মহিলা চলতে
লাগল, আর ফযল তাদের দিকে তাকাতেন লাগলেন, রাসূলুল্লাহ (সা) তাঁর হাত ফযলের চেহারায়
রাখলেন। তখন ফযল তার চেহারা অন্য দিকে ফিরিয়ে নিলেন। এরপর রাসূলুল্লাহ (সা) তাঁর হাত
অন্য দিক থেকে সরিয়ে ফযলের চেহারার ওপর আবার রেখে যেদিকে তিনি তাকাচ্ছিলেন সেদিক
থেকে তার চেহারা ঘুরিয়ে দিলেন।
এবং বললেন,
عَلَيْكُمُ السَّكِينَةُ ‘
বড় জামরায় কঙ্কর নিক্ষেপ
৭৭- ‘তারপর তিনি মাঝপথ ধরে চলতে লাগলেন[11], যা বড় জামরার কাছ দিয়ে বের হয়ে গেছে।’[12] অবশেষে তিনি গাছের সন্নিকটে অবস্থিত জামরায় এসে পৌঁছলেন।
করলেন।
৭৯- প্রতিটি কঙ্কর নিক্ষেপের সময় ‘আল্লাহু আকবার’ বললেন। প্রত্যেকটি কঙ্কর ছিল বুটের
ন্যায়।[14]
لِتَأْخُذُوا مَنَاسِكَكُمْ فَإِنِّى لاَ أَدْرِى لَعَلِّى لاَ أَحُجُّ بَعْدَ حَجَّتِى هَذِهِ
‘তোমরা তোমাদের হজের বিধি-বিধান শিখে নাও। কারণ আমি জানি না, হয়ত আমি এই হজের পরে আর হজ করতে পারব না।’[16]
৮১- জাবের রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা) ‘তাশরীকের সব দিনেই’[17] ‘সূর্য হেলে যাওয়ার পরে’[18]কঙ্কর নিক্ষেপ করলেন[19]।
৮২- ‘তিনি আকাবা তথা বড় জামরাতে কঙ্কর নিক্ষেপকালে সুরাকা তাঁর সাথে সাক্ষাত করলেন।
অতপর বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ, এটা কি খাস করে আমাদের জন্য ? তিনি বললেন,
لاََ بَلْ لأَبَدٍ ‘
চলবে...
[1]. মাশআরে হারাম দ্বারা উদ্দেশ্য ‘কুযাহ’ নামক স্থান। এটি মুযদালিফার একটি প্রসিদ্ধ পাহাড়। সকল সীরাতবিদ ও
মুফাসসিরের মতে, সমগ্র মুযদালিফাকেই মাশআরে হারাম বলে।
ইমাম নাববী রহ.।
[3]. আবূ দাউদ।
[4]. নাসাঈ।
[5]. বাইহাকী।
[6]. সূর্যোদয়ের পূর্বে মুযদালিফা থেকে প্রস্থান মুশরিকদের নিয়মের বিপরীত করার লক্ষ্যেই ছিল, কেননা মুশরিকরা
মুযদালিফা ত্যাগ করতো সূর্যোদয়ের পর। রাসূল ﷺ বলেছেন, ‘আমাদের আদর্শ ওদের থেকে ভিন্ন।’
[7]. আবূ দাউদ।
[8]. এ হাদীস এবং পূর্বে বর্ণিত ৫৬ নং হাদীস থেকে বুঝা যায় বাহনের পেছনে কাউকে নিতে কোনো অসুবিধা নেই।
[9]. এই স্থানে আবরাহার হস্তি বাহিনীকে আল্লাহ তা‘আলা ধ্বংস করে দিয়েছিলেন। ইবনুল-কায়্যিম রহ. বলেন, মুহাস্সার
মিনা ও মুযদালিফার মাঝখানে অবস্থিত। এটা মিনা বা মুযদালিফার অন্তর্ভুক্ত নয়।
[10]. দারেমী।
যাওয়া এবং আরেক পথ দিয়ে ফেরা সুন্নত।
তবে এরচেয়ে ছোট বা বড় হলেও তা জায়িজ হবে।
[15]. নাসাঈ।
[17]. মুসনাদে আহমদ।
[18]. মুসলিম।
[19]. যিলহজ মাসের ১১-১২-১৩ তারিখের দিনগুলোকে আইয়্যামে তাশরীক বলা হয়।