السلام عليكم
দৈনন্দিন পথনির্দেশিকা
রাসূলুল্লাহ যেভাবে হজ করেছেন-১০
তাওয়াফে ইফাযা তথা বায়তুল্লাহ্র ফরয তাওয়াফ আদায়
১০০- ‘অতপর রাসূলুল্লাহ (সা) বাহনে সওয়ার হয়ে বাইতুল্লাহ গেলেন এবং (বায়তুল্লাহর ফরয) তাওয়াফ
করলেন। সাহাবীগণও তাওয়াফ করলেন।’
১০২- অতপর তিনি মক্কায় যোহরের সালাত আদায় করলেন।
انْزِعُوا بَنِى عَبْدِ الْمُطَّلِبِ فَلَوْلاَ أَنْ يَغْلِبَكُمُ النَّاسُ عَلَى سِقَايَتِكُمْ لَنَزَعْتُ مَعَكُمْ
‘হে আবদুল মুত্তালিবের বংশধর! বালতি ভর্তি করে পানি তুলে তা (হাজীদেরকে) পান করাও।
তোমাদের কাছ থেকে পানি পান করানোর দায়িত্ব কেড়ে নেয়ার ভয় না থাকলে আমিও নিজ
হাতে তোমাদের সাথে বালতি ভরে পানি তুলে তা পান করাতাম।’[3]
১০৪- অতপর তারা তাঁকে বালতি ভরে পানি দিলেন, আর তিনি তা পান করলেন।
হজের পর আয়েশা রা. এর উমরা পালন
১০৫- জাবের রা. বলেন, ‘আয়েশা রা. ঋতুবতী হলেন। তখন বায়তুল্লাহর তাওয়াফ ছাড়া তিনি হজের আর সব আমল সম্পন্ন করলেন।’[4]
১০৬- তিনি বলেন, ‘যখন তিনি পবিত্র হলেন, তখন কা‘বার তাওয়াফ করলেন এবং সাফা-মারওয়ায় সা‘ঈ করলেন।’
১০৭- অতপর রাসূলুল্লাহ (সা) বললেন,
قَدْ حَلَلْتِ مِنْ حَجِّكِ وَعُمْرَتِكِ جَمِيعًا
‘তুমি তোমার হজ ও উমরা উভয়টি থেকে হালাল হয়ে গিয়েছ।’[5]
১০৮- আয়েশা রা. বললেন, হে আল্লাহর রাসূল, ‘আপনারা সবাই হজ ও উমরা করে যাবেন আর আমি কি শুধু হজ করে যাব?’[6]
তিনি বললেন,
إِنَّ لَكِ مِثْلَ مَا لَهُمْ
‘তোমারও তাদের মতই হজ ও উমরা হয়ে গিয়েছে।’[7]
১০৯- আয়েশা রা. বললেন, ‘আমি মনে কষ্ট পাচ্ছি, কেননা, আমি তো শুধু হজের পরে বায়তুল্লাহর তাওয়াফ করেছি।’[8]
১১০- জাবের রা. বলেন, ‘রাসূলুল্লাহ (সা) নরম স্বভাবের লোক ছিলেন। যখন আয়েশা. কিছু কামনা করতেন, তিনি সেদিকে লক্ষ্য রাখতেন।’[9]
১১১- রাসূলুল্লাহ (সা) বললেন,
فَاذْهَبْ بِهَا يَا عَبْدَ الرَّحْمَنِ فَأَعْمِرْهَا مِنَ التَّنْعِيمِ
‘হে আবদুর রহমান! তুমি তাকে নিয়ে যাও এবং তাকে তানঈম থেকে উমরা করাও।’[10]
১১২- অতপর, ‘আয়েশা রা. হজের পরে উমরা করলেন।’[11] ‘তারপর ফিরে এলেন।’[12] ‘আর এটা ছিল হাসবার রাতে[13]।’[14]
১১৩- জাবের রা. বলেন, ‘রাসূলুল্লাহ (সা) বিদায় হজে নিজের বাহনে আরোহন করে বায়তুল্লাহর
তাওয়াফ করলেন এবং নিজের বাঁকা লাঠি দিয়ে হাজরে আসওয়াদ স্পর্শ করলেন, যাতে লোকজন তাঁকে
দেখতে পায় এবং তিনি ওপরে থেকে তাদের তত্ত্বাবধান করতে পারেন। আর যাতে তারা তাঁর কাছে
জিজ্ঞেস করতে পারে। কেননা লোকজন তাঁকে ঘিরে রেখেছিল।’[15]
১১৪- জাবের রা. বলেন, ‘এক মহিলা তার একটি বাচ্চা তাঁর সামনে উঁচু করে ধরে বললেন, হে আল্লাহর
রাসূল, এর কি হজ হবে?
তিনি বললেন,
نَعَمْ وَلَكِ أَجْرٌ
‘হ্যাঁ, আর তোমার জন্য রয়েছে পুরস্কার।’[16]
[2]. দারমী।
[3]. অর্থাৎ
কাজের নেকী নিয়ে ফিরবো?
[7]. মুসনাদে আহমদ।
[9]. মুসলিম।
যিলহজ মাসে উমরা করিয়েছেন। কুরাইশ গোত্র ও তাদের অনুসারীরা বলতো, ‘যখন উটের লোম গজিয়ে বেশি হবে,
পৃষ্ঠদেশ সুস্থ হবে এবং সফর মাস প্রবেশ করবে তখনই উমরাকারির উমরা সহীহ হবে’। তারা যিলহজ ও মুহররম শেষ
হওয়ার পূর্বে উমরা হারাম মনে করত’ (আবূ দাউদ : ১৯৮৭)।
[12]. মুসনাদে আহমদ।
রাসূলুল্লাহ ও সাহাবীগণ ১৪ তারিখের রাত এ স্থানে যাপন করেছিলেন। যেসব জায়গায় পূর্বে শিরক বা কুফরী কর্ম অথবা
আল্লাহর শত্রুতা প্রকাশ করা হত সেসব জায়গায় রাসূলুল্লাহ ইচ্ছাকৃতভাবে ইসলামের নিদর্শনসমূহ প্রকাশ করেছেন। এই
মর্মে তিনি মিনায় বলেন, ‘আমরা আগামীকাল বনূ কিনানার খায়ফে (অর্থাৎ মুহাস্সাব তথা হাসবা নামক স্থানে) যেতে চাচ্ছি,
যেখানে তারা কুফরীকর্মের ওপর অঙ্গীকারাবদ্ধ হয়েছিল, আর তা ছিল এই যে, কুরাইশ ও বনূ কিনানা, বনূ হাশিম ও বনূ
আবদুল মুত্তালিবের বিরুদ্ধে এই মর্মে শপথ করেছিল যে, তাদের সাথে তারা বৈবাহিক সম্পর্ক কায়েম করবে না, বেচাকেনা
করবে না, যতক্ষণ না তারা নবীকে তাদের কাছে সোপর্দ করে (বুখারী :১৫৯০)। ইবনুল কায়্যিম রহ. বলেন, ‘এটাই ছিল
রাসূলুল্লাহ এর অভ্যাস যে, তিনি কুফরের নিদর্শনের স্থানসমূহে তাওহীদের নিদর্শন প্রকাশ করতেন (যাদুল মা‘আদ)।
[14]. মুসলিম।