Tuesday, July 24, 2012

রামাদান ম্যানুয়াল-৪



السلام
 عليكم


দৈনন্দিন পথনির্দেশিকা

রামাদান ম্যানুয়াল-৪

বিষয়ভিত্তিক আল-কোরআন ও আল-হাদীস অধ্যয়ন
০৪ রামাদান
বিষয়: রিসালাহ ও দু
সূরা বাক্বারাহ : ২৮৪- ২৮৬
لِّلَّهِ ما فِي السَّمَاواتِ وَمَا فِي الأَرْضِ وَإِن تُبْدُواْ مَا فِي أَنفُسِكُمْ أَوْ تُخْفُوهُ يُحَاسِبْكُم بِهِ اللَّهُ فَيَغْفِرُ لِمَن يَشَاء وَيُعَذِّبُ مَن يَشَاء وَاللَّهُ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ (২৮৪) آمَنَ الرَّسُولُ بِمَا أُنزِلَ إِلَيْهِ مِن رَّبِّهِ وَالْمُؤْمِنُونَ كُلٌّ آمَنَ بِاللَّهِ وَمَلآئِكَتِهِ وَكُتُبِهِ وَرُسُلِهِ لاَ نُفَرِّقُ بَيْنَ أَحَدٍ مِّن رُّسُلِهِ وَقَالُواْ سَمِعْنَا وَأَطَعْنَا غُفْرَانَكَ رَبَّنَا وَإِلَيْكَ الْمَصِيرُ (২৮৫) لاَ يُكَلِّفُ اللَّهُ نَفْسًا إِلاَّ وُسْعَهَا لَهَا مَا كَسَبَتْ وَعَلَيْهَا مَا اكْتَسَبَتْ رَبَّنَا لاَ تُؤَاخِذْنَا إِن نَّسِينَا أَوْ أَخْطَأْنَا رَبَّنَا وَلاَ تَحْمِلْ عَلَيْنَا إِصْرًا كَمَا حَمَلْتَهُ عَلَى الَّذِينَ مِن قَبْلِنَا رَبَّنَا وَلاَ تُحَمِّلْنَا مَا لاَ طَاقَةَ لَنَا بِهِ وَاعْفُ عَنَّا وَاغْفِرْ لَنَا وَارْحَمْنَآ أَنتَ مَوْلاَنَا فَانصُرْنَا عَلَى الْقَوْمِ الْكَافِرِينَ (২৮৬)
২৮৪) আকাশসমূহে ৩৩৩ ও পৃথিবীতে যা কিছু আছেসবই আল্লাহর। ৩৩৪  তোমরা নিজেদের মনের কথা প্রকাশ করো বা লুকিয়ে রাখোআল্লাহ অবশ্যই তোমাদের কাছ থেকে তার হিসাব নেবেন। ৩৩৫  তারপর তিনি যাকে ইচ্ছা মাফ করে দেবেন এবং যাকে ইচ্ছা শাস্তি দেবেনএটা তাঁর এখতিয়ারাধীন। তিনি সব জিনিসের ওপর শক্তি খাটাবার অধিকারী। ৩৩৬ 
২৮৫) রাসূল তাঁর রবের পক্ষ থেকে তাঁর ওপর যে হিদায়াত নাযিল হয়েছে তার প্রতি ঈমান এনেছেন। আর যেসব লোক ঐ রাসূলের প্রতি ঈমান এনেছে তারাও ঐ হিদায়াতকে মনে-প্রাণে স্বীকার করে নিয়েছে। তারা সবাই আল্লাহকেতাঁর ফেরেশতাদেরকেতাঁর কিতাবসমূহকে ও তাঁর রাসূলদেরকে মানে এবং তাদের বক্তব্য হচ্ছেঃ আমরা আল্লাহর রসূলদের একজনকে আর একজন থেকে আলাদা করি না। আমরা নির্দেশ শুনেছি ও অনুগত হয়েছি। হে প্রভু ! আমরা তোমার কাছে গোনাহ মাফের জন্য প্রার্থনা করছি। আমাদেরকে তোমারই দিকে ফিরে যেতে হবে। ৩৩৭ 
২৮৬) আল্লাহ কারোর ওপর তার সামর্থের অতিরিক্ত দায়িত্বের বোঝা চাপিয়ে দেননা। ৩৩৮  প্রত্যেক ব্যক্তি যে নেকী উপার্জন করেছে তার ফল তার নিজেরই জন্য এবং যে গোনাহ সে অর্জন করেছেতার প্রতিফলও তারই বর্তাবে। ৩৩৯  (হে ঈমানদারগণতোমরা এভাবে দোয়া চাও) হে আমাদের রব! ভুল-ভ্রান্তিতে আমরা যেসব গোনাহ করে বসিতুমি সেগুলো পাকড়াও করো না। হে প্রভু! আমাদের ওপর এমন বোঝা চাপিয়ে দিয়ো নাযা তুমি আমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর চাপিয়ে দিয়েছিলে। ৩৪০ হে আমাদের প্রতিপালক! যে বোঝা বহন করার সামর্থ আমাদের নেইতা আমাদের ওপর চাপিয়ে দিয়ো না। ৩৪১ আমাদের প্রতি কোমল হওআমাদের অপরাধ ক্ষমা করো এবং আমাদের প্রতি করুণা করো। তুমি আমাদের অভিভাবক। কাফেরদের মোকাবিলায় তুমি আমাদের সাহায্য করো। ৩৪২ 

আয়াত সমূহের ব্যাখ্যা

৩৩৩. এখানে ভাষণ সমাপ্ত করা হয়েছে। তাই দ্বীনের মৌলিক শিক্ষাগুলোর বর্ণনার মাধ্যমে যেমন সূরার সূচনা করা হয়েছিল ঠিক তেমনি যে সমস্ত মৌলিক বিষয়ের ওপর দ্বীনের ভিত্তি প্রতিষ্ঠিতসূরার সমাপ্তি প্রসংগে সেগুলোও বর্ণনা করে দেয়া হয়েছে। তুলনামূলক পাঠের জন্য সূরার প্রথম রুকূটি সামনে রাখলে বিষয়-বস্তু বুঝতে বেশী সাহায্য করবে বলে মনে করি।
৩৩৪. এটি হচ্ছে দ্বীনের প্রথম বুনিয়াদ। আল্লাহ এই পৃথিবী ও আকাশ সমূহের মালিক এবং আকাশ ও পৃথিবীর মধ্যে যা কিছু আছে সবকিছু তাঁর একক মালিকানাধীনপ্রকৃতপক্ষে এই মৌলিক সত্যের ভিত্তিতেই মানুষের জন্য আল্লাহর সামনে আনুগত্যের শির নত করা ছাড়া দ্বিতীয় কোন কর্মপদ্ধতি বৈধ ও সঠিক হতে পারে না।
৩৩৫. এই বাক্যটিতে আরো দুটি কথা বলা হয়েছে। এক: প্রত্যেক ব্যক্তি এককভাবে আল্লাহর কাছে দায়ী হবে এবং এককভাবে তাকে জবাবাদিহি করতে হবে। দুই: পৃথিবী ও আকাশের যে একচ্ছত্র অধিপতির কাছে মানুষকে জবাবদিহি করতে হবে তিনি অদৃশ্য ও প্রকাশ্যের জ্ঞান রাখেন। এমনকি লোকদের গোপন সংকল্প এবং তাদের মনের সংগোপনে যেসব চিন্তা জাগে সেগুলোও তাঁর কাছে গোপন নেই।
৩৩৬. এটি আল্লাহর অবাধ ক্ষমতারই একটি বর্ণনা। তাঁর ওপর কোন আইনের বাঁধন নেই। কোন বিশেষ আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য তিনি বাধ্য নন। বরং তিনি সর্বময় ও একচ্ছত্র ক্ষমতার অধিকারী। শাস্তি দেয়ার ও মাফ করার পূর্ণ ইখতিয়ার তাঁর রয়েছে।
৩৩৭. বিস্তারিত আলোচনায় না গিয়ে এই আয়াতে ইসলামী আক্বীদা-বিশ¡াস ও কর্মপদ্ধতির সংক্ষিপ্ত সঞ্চার বর্ণনা করা হয়েছে। এই সংক্ষিপ্ত সার হচ্ছেঃ আল্লাহকেতাঁর ফেরেশতাদেরকে ও তাঁর কিতাবসমূহকে মেনে নেয়া,তাঁর রাসূলদের মধ্যে কোন প্রকার পার্থক্য সূচিত না করে (অথার্ৎ কাউকে মেনে নেয়া আর কাউকে না মেনে নেয়া) তাঁদেরকে ¯ীকার করে নেয়া এবং সবশেষে আমাদের তাঁর সামনে হাজির হতে হবে এ বিষয়টি ¯ীকার করে নেয়া। এ পাঁচটি বিষয় ইসলামের বুনিয়াদী আক্বীদার অন্তর্ভূক্ত। এই আক্বীদাগুলো মেনে নেয়ার পর একজন মুসলমানের জন্য নিম্নোক্ত কর্মপদ্ধিতই সঠিক হতে পারেঃ আল্লাহর পক্ষ থেকে যে নির্দেশগুলো আসবে সেগুলোকে সে মাথা পেতে গ্রহণ করে নেবেসেগুলোর আনুগত্য করবে এবং নিজের ভালো কাজের জন্য অহংকার করে বেড়াবেনা বরং আল্লাহর কাছে অবনত হতে ও ক্ষমা প্রার্থনা করতে থাকবে।
৩৩৮. অর্থাৎ আল্লাহর কাছে মানুষের সামর্থ অনুযায়ী তার দায়িত্ব বিবেচিত হয়। মানুষ কোন কাজ করার ক্ষমতা রাখেনা অথচ আল্লাহ তাকে সে কাজটি না করার জন্য জিজ্ঞাসাবাদ করবেনএমনটি কখনো হবে না। অথবা প্রকৃতপক্ষে কোন কাজ বা জিনিস থেকে দূরে থাকার সামর্থই মানুষের ছিল নাসে ক্ষেত্রে তাতে জড়িত হয়ে পড়ার জন্য আল্লাহর কাছে তাকে জবাবদিহি করতে হবে না। কিন্তু এ ক্ষেত্রে মনে রাখতে হবেনিজের শক্তি-সামর্থ আছে কিনাএ সম্পর্কে মানুষ নিজে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারে না। প্রকৃতপক্ষে মানুষের কিসের শক্তি-সামর্থ ছিল আর কিসের ছিল না- এ সিদ্ধান্ত একমাত্র আল্লাহ গ্রহণ করতে পারেন।
৩৩৯. এটি আল্লাহ প্রদত্ত মানবিক এখতিয়ার বিধির দ্বিতীয় মূলনীতি। প্রত্যেক ব্যক্তি নিজে যে কাজ করেছে তার পুরস্কার পাবে। একজনের কাজের পুরষ্কার অন্যজন পাবে এটা কখনো সম্ভব নয়। অনুরূপভাবে প্রত্যেক ব্যক্তি নিজে যে দোষ করেছে সে জন্য পাকড়াও হবে। একজন দোষ করবে আর অন্যজন পাকাড়ও হবে এটা কখনো সম্ভব নয়। তবে এটা সম্ভবএক ব্যক্তি কোন সৎকাজের ভিত্তি রাখলো এবং দুনিয়ায় হাজার বছর পর্যন্ত তার প্রভাব প্রতিষ্ঠিত থাকলোএ ক্ষেত্রে এগুলো সব তার আমলনামায় লেখা হবে। আবার অন্য এক ব্যক্তি কোন খারাপ কাজের ভিত্তি রাখলো এবং শত শত বছর পর্যন্ত দুনিয়ায় তার প্রভাব প্রতিষ্ঠিত থাকলো। এ অবস্থায় এ গুলোর গোনাহ ঐ প্রথম জালেমের আমলনামায় লেখা হবে। তবে এ ক্ষেত্রে ভালো বা মন্দ যা কিছু ফল হবে সবই হবে মানুষের প্রচেষ্টা ও সাধনার ফলশ্রতি। মোটকথা যে ভালো বা মন্দ কাজে মানুষের নিজের ইচ্ছাসংকল্পপ্রচেষ্টা ও সাধনার কোন অংশই নেই,তার শাস্তি বা পুরস্কার সে পাবেএটা কোনক্রমেই সম্ভব নয়। কর্মফল হস্তান্তর হওয়ার মতো জিনিস নয়।
৩৪০. অর্থাৎ আমাদের পূর্ববর্তীরা তোমার পথে চলতে গিয়ে যেসব পরীক্ষাভয়াবহ বিপদদুঃখ-দুর্দশা ও সংকটের সম্মুখীন হয়তার হাত থেকে আমাদের রক্ষা করো। যদিও আল্লাহর রীতি হচ্ছেযে ব্যক্তি সত্য ও ন্যায়ের অনুসরণ করার সংকল্প করেছেতাকেই তিনি কঠিন পরীক্ষা ও সংকটের সাগরে নিক্ষেপ করেছেন এবং পরীক্ষার সম্মুখীন হলে মুমিনের কাজই হচ্ছে পূর্ণ ধৈর্য্য ও দঢ়তার সাথে তার মোকাবিলা করাতবুও মুমিনকে আল্লাহর কাছে এই দোয়াই করতে হবে যেতিনি যেন তার জন্য সত্য ও ন্যায়ের পথে চলা সহজ করে দেন।
৩৪১. অর্থাৎ সমস্যা ও সংকটের এমন বোঝা আমাদের ওপর চাপাওযা বহন করার ক্ষমতা আমাদের আছে। যে পরীক্ষায় পুরোপুরি উত্তীর্ণ হবার ক্ষমতা আমাদের আয়ত্বাধীন তেমনি পরীক্ষায় আমাদের নিক্ষেপ করো। আমাদের সহ্য ক্ষমতার বেশী দুঃখ-কষ্ট ও বিপদ আমাদের ওপর চাপিয়ে দিয়ো না। তাহলে আমরা সত্য পথ থেকে বিচ্যুত হয়ে যাবো।
৩৪২. এই দোয়াটির পূর্ণ প্রাণসত্তা অনুধাবন করার জন্য এর নিম্নোক্ত প্রেক্ষাপটটি সামনে রাখতে হবে। হিজরতের প্রায় এক বছর আগে মিরাজের সময় এ আয়াতটি নাযিল হয়েছিল। তখন মক্কায় ইসলাম ও কুফরের লড়াই চরম পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছিল। মুসলমানদের মাথায় বিপদ ও সংকটের পাহাড় ভেঙ্গে পড়েছিল। কেবল মক্কাতেই নয়আরব ভূ-খন্ডের কোথাও এমন কোন জায়গা ছিল না যেখানে কোন ব্যক্তি দ্বীন ইসলাম গ্রহন করেছিল এবং তার জন্য আল্লাহর যমীনেবেঁচে থাকা কঠিন হয়ে পড়েনি। এ অবস্থায় মুসলমানদের আল্লাহর কাছে এভাবে দোয়া করার নির্দেশ দেয়া হলো। দানকারী নিজেই যখন চাওয়ার পদ্ধতি বাতলে দেন তখন তা পাওয়ার ব্যাপারে পূর্ণ নিশ্চিত হওয়া যায়। তাই এই দোয়া সেদিন মুসলমানদের জন্য অসাধারণ মানসিক নিশ্চিন্ততার কারণ হয়।
এ ছাড়াও এই দোয়ায় পরোক্ষভাবে মুসলমানদের নির্দেশ দেয়া হয়নিজেদের আবেগ অনুভূতিকে কখনো অসংগত ও অনুপযোগী ধারায় প্রবাহিত করো না বরং সেগুলোকে এই দোয়ার ছাঁচে ঢালাই করো। একদিকে নিছক সত্যানুসারিতা ও সত্যের প্রতি সমর্থন দানের কারণে লোকদের ওপর যেসব হৃদয় বিদারক জুলুম নির্যাতন চালানো হচ্ছিল সেগুলো দেখুন এবং অন্যদিকে এই দোয়াগুলো দেখুনযাতে শত্রদের বিরুদ্ধে সামান্য তিক্ততার নামগন্ধও নেই। একদিকে এই সত্যানুসারীরা যেসব শারীরিক দুর্ভোগ ও আর্থিক ক্ষতির সম্মূখীন হচ্ছিল সেগুলো দেখুন এবং অন্যদিকে এই দোয়াগুলো দেখুনযাতে পার্থিব স্বার্থের সামান্য প্রত্যাশাও নেইএকদিকে সত্যানুসারীদের চরম দূরবস্থা দেখুন এবং অন্যদিকে এই দোয়ায় উৎসারিত উন্নত ও পবিত্র আবেগ-উদ্দীপনা দেখুন। এই তুলনামূলক বিশ্লেষণের মাধ্যমেই সে সময় ঈমানদারদের কোন ধরনের নৈতিক ও আধ্যাত্মিক অনুশীলন দেয়া হচ্ছিলতা সঠিক ও নির্ভূলভাবে অনুধাবন করা সম্ভব হবে।
বিষয়ভিত্তিক হাদীস-০৪

عَنْ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ أَيْضًا قَالَ" بَيْنَمَا نَحْنُ جُلُوسٌ عِنْدَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم ذَاتَ يَوْمٍ، إذْ طَلَعَ عَلَيْنَا رَجُلٌ شَدِيدُ بَيَاضِ الثِّيَابِ، شَدِيدُ سَوَادِ الشَّعْرِ، لَا يُرَى عَلَيْهِ أَثَرُ السَّفَرِ، وَلَا يَعْرِفُهُ مِنَّا أَحَدٌ. حَتَّى جَلَسَ إلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم . فَأَسْنَدَ رُكْبَتَيْهِ إلَى رُكْبَتَيْهِ، وَوَضَعَ كَفَّيْهِ عَلَى فَخْذَيْهِ، وَقَالَ: يَا مُحَمَّدُ أَخْبِرْنِي عَنْ الْإِسْلَامِ. فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم الْإِسْلَامُ أَنْ تَشْهَدَ أَنْ لَا إلَهَ إلَّا اللَّهُ وَأَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللَّهِ، وَتُقِيمَ الصَّلَاةَ، وَتُؤْتِيَ الزَّكَاةَ، وَتَصُومَ رَمَضَانَ، وَتَحُجَّ الْبَيْتَ إنْ اسْتَطَعْت إلَيْهِ سَبِيلًا. قَالَ: صَدَقْت . فَعَجِبْنَا لَهُ يَسْأَلُهُ وَيُصَدِّقُهُ! قَالَ: فَأَخْبِرْنِي عَنْ الْإِيمَانِ. قَالَ: أَنْ تُؤْمِنَ بِاَللَّهِ وَمَلَائِكَتِهِ وَكُتُبِهِ وَرُسُلِهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ، وَتُؤْمِنَ بِالْقَدَرِ خَيْرِهِ وَشَرِّهِ. قَالَ: صَدَقْت. قَالَ: فَأَخْبِرْنِي عَنْ الْإِحْسَانِ. قَالَ: أَنْ تَعْبُدَ اللَّهَ كَأَنَّك تَرَاهُ، فَإِنْ لَمْ تَكُنْ تَرَاهُ فَإِنَّهُ يَرَاك. قَالَ: فَأَخْبِرْنِي عَنْ السَّاعَةِ. قَالَ: مَا الْمَسْئُولُ عَنْهَا بِأَعْلَمَ مِنْ السَّائِلِ. قَالَ: فَأَخْبِرْنِي عَنْ أَمَارَاتِهَا؟ قَالَ: أَنْ تَلِدَ الْأَمَةُ رَبَّتَهَا، وَأَنْ تَرَى الْحُفَاةَ الْعُرَاةَ الْعَالَةَ رِعَاءَ الشَّاءِ يَتَطَاوَلُونَ فِي الْبُنْيَانِ. ثُمَّ انْطَلَقَ، فَلَبِثْنَا مَلِيًّا، ثُمَّ قَالَ: يَا عُمَرُ أَتَدْرِي مَنْ السَّائِلُ؟. قَلَتْ: اللَّهُ وَرَسُولُهُ أَعْلَمُ. قَالَ: فَإِنَّهُ جِبْرِيلُ أَتَاكُمْ يُعَلِّمُكُمْ دِينَكُم". رَوَاهُ مُسْلِمٌ
এটাও উমর রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত হয়েছেতিনি বলেন,একদিন আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট বসেছিলামএমন সময় হঠাৎ এক ব্যক্তি আমাদের সামনে উপস্থিত হয়যার কাপড় ছিল ধবধবে সাদাচুল ছিল ভীষণ কালোতার মাঝে ভ্রমণের কোন লক্ষণ পরিলক্ষিত হচ্ছিল না। আমাদের মধ্যে কেউ তাকে চিনতে পারেনি। সে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকটে গিয়ে বসেনিজের হাঁটু তার হাঁটুর সঙ্গে মিলিয়ে নিজের হাত তার উরুতে রেখে বললেন: হে মুহাম্মাদআমাকে ইসলাম সম্পর্কে বলুন
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন: ইসলাম হচ্ছে এই- তুমি সাক্ষ্য দাও যেআল্লাহ ছাড়া আর কোন সত্য ইলাহ্ নেই এবং মুহাম্মাদ (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আল্লাহর রাসূলসালাত প্রতিষ্ঠা করযাকাত আদায় কররামাদানে সাওম সাধনা কর এবং যদি সামর্থ থাকে তবে (আল্লাহর) ঘরের হজ্জ কর।
তিনি (লোকটি) বললেন: আপনি ঠিক বলেছেন। আমরা বিস্মিত হলামসে নিজে তার নিকট জিজ্ঞাসা করেছে আবার নিজেই তার জবাবকে ঠিক বলে ঘোষণা করছে। এরপর বলল: আচ্ছাআমাকে ঈমান সম্পর্কে বলুন
তিনি (রাসূল) বললেন: তা হচ্ছে এই- আল্লাহর ফিরিশতাগণতাঁর কিতাবসমূহতাঁর রাসূলগণ ও আখেরাতর উপর ঈমান আনা এবং তাকদীরের ভাল-মন্দের উপর ঈমান আনা
সে (আগন্তুক) বলল: আপনি ঠিক বলেছেন। তারপর বলল: আমাকে ইহসান সম্পর্কে বলুন
তিনি বলেন: তা হচ্ছে এই- তুমি এমনভাবে আল্লাহর ইবাদাত কর যেন তুমি আল্লাহকে দেখতে পাচ্ছআর তুমি যদি তাঁকে দেখতে নাও পাও তবে তিনি তোমাকে দেখছেন
সে (আগন্তুক) বলল: আমাকে কেয়ামত সম্পর্কে বলুন
তিনি (রাসূল) বললেন: যাকে জিজ্ঞাসা করা হচ্ছে সে জিজ্ঞাসাকারী অপেক্ষাবেশী কিছু জানে না
সে (আগন্তুক) বলল: আচ্ছাতার লক্ষণ সম্পর্কে বলুন
তিনি (রাসূল) বললেন: তা হচ্ছে এই- দাসী নিজের মালিককে জন্ম দেবেসম্পদ ও বস্ত্রহীন রাখালগণ উঁচু উঁচু প্রাসাদ তৈরি করে দম্ভ করবে
তারপর ঐ ব্যক্তি চলে যায়আর আমি আরো কিছুক্ষণ বসে থাকি। তখন তিনি (রাসূল) আমাকে বললেন: হে উমারপ্রশ্নকারী কে ছিলেনতুমি কি জানআমি বললাম: আল্লাহ ও তাঁর রাসূল অধিক ভাল জানেন। তিনি (রাসূল সা:) বললেন: তিনি হলেন জিবরীল। তোমাদেরকে তোমাদের দ্বীন শিক্ষা দিতে তোমাদের কাছে এসেছিলেন। [সহীহ মুসলিম]
নির্বাচিত
আয়াত মুখস্তকরণ

মুখস্ত করণ: দ্বিতীয় আয়াত
৪-৬ রামাদান: ৩ দিন

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اجْتَنِبُوا كَثِيرًا مِّنَ الظَّنِّ إِنَّ بَعْضَ الظَّنِّ إِثْمٌ وَلا تَجَسَّسُوا وَلا يَغْتَب بَّعْضُكُم بَعْضًا أَيُحِبُّ أَحَدُكُمْ أَن يَأْكُلَ لَحْمَ أَخِيهِ مَيْتًا فَكَرِهْتُمُوهُ وَاتَّقُوا اللَّهَ إِنَّ اللَّهَ تَوَّابٌ رَّحِيمٌ (১২)
হে ঈমানদাগণবেশী ধারণা ও অনুমান করা থেকে বিরত থাকো। কারণ কোন কোন ধারণা ও অনুমান গোনাহ। দোষ অন্বেষণ করো না। আর তোমাদের কেউ যেন কারো গীবত না করে। এমন কেউ কি তোমাদের মধ্যে আছেযে তার নিজের মৃত ভাইয়ের গোশত খাওয়া পছন্দ করবেদেখোতা খেতে তোমাদের ঘৃণা হয়। আল্লাহকে ভয় করো। আল্লাহ অধিক পরিমাণে তাওবা কবুলকারী এবং দয়ালু। সূরা হুজুরাত: ১২

নির্বাচিত
আল-হাদীস মুখস্তকরণ
মুখস্থকরণ: প্রথম হাদীস
১-৯ রামাদান

عَنْ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ أَيْضًا قَالَ " بَيْنَمَا نَحْنُ جُلُوسٌ عِنْدَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم ذَاتَ يَوْمٍ، إذْ طَلَعَ عَلَيْنَا رَجُلٌ شَدِيدُ بَيَاضِ الثِّيَابِ، شَدِيدُ سَوَادِ الشَّعْرِ، لَا يُرَى عَلَيْهِ أَثَرُ السَّفَرِ، وَلَا يَعْرِفُهُ مِنَّا أَحَدٌحَتَّى جَلَسَ إلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم . فَأَسْنَدَ رُكْبَتَيْهِ إلَى رُكْبَتَيْهِ، وَوَضَعَ كَفَّيْهِ عَلَى فَخْذَيْهِ، وَقَالَيَا مُحَمَّدُ أَخْبِرْنِي عَنْ الْإِسْلَامِفَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم الْإِسْلَامُ أَنْ تَشْهَدَ أَنْ لَا إلَهَ إلَّا اللَّهُ وَأَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللَّهِ، وَتُقِيمَ الصَّلَاةَ، وَتُؤْتِيَ الزَّكَاةَ، وَتَصُومَ رَمَضَانَ، وَتَحُجَّ الْبَيْتَ إنْ اسْتَطَعْت إلَيْهِ سَبِيلًاقَالَصَدَقْت . فَعَجِبْنَا لَهُ يَسْأَلُهُ وَيُصَدِّقُهُقَالَفَأَخْبِرْنِي عَنْ الْإِيمَانِقَالَأَنْ تُؤْمِنَ بِاَللَّهِ وَمَلَائِكَتِهِ وَكُتُبِهِ وَرُسُلِهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ، وَتُؤْمِنَ بِالْقَدَرِ خَيْرِهِ وَشَرِّهِقَالَصَدَقْتقَالَفَأَخْبِرْنِي عَنْ الْإِحْسَانِقَالَأَنْ تَعْبُدَ اللَّهَ كَأَنَّك تَرَاهُ، فَإِنْ لَمْ تَكُنْ تَرَاهُ فَإِنَّهُ يَرَاكقَالَفَأَخْبِرْنِي عَنْ السَّاعَةِقَالَمَا الْمَسْئُولُ عَنْهَا بِأَعْلَمَ مِنْ السَّائِلِقَالَفَأَخْبِرْنِي عَنْ أَمَارَاتِهَا؟ قَالَأَنْ تَلِدَ الْأَمَةُ رَبَّتَهَا، وَأَنْ تَرَى الْحُفَاةَ الْعُرَاةَ الْعَالَةَ رِعَاءَ الشَّاءِ يَتَطَاوَلُونَ فِي الْبُنْيَانِثُمَّ انْطَلَقَ، فَلَبِثْنَا مَلِيًّا، ثُمَّ قَالَيَا عُمَرُ أَتَدْرِي مَنْ السَّائِلُ؟قَلَتْاللَّهُ وَرَسُولُهُ أَعْلَمُقَالَفَإِنَّهُ جِبْرِيلُ أَتَاكُمْ يُعَلِّمُكُمْ دِينَكُم". رَوَاهُ مُسْلِمٌ

উমার (রা:) হতে বর্ণিত। তিনি বলেনএকদিন আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট বসেছিলামএমন সময় হঠাৎ এক ব্যক্তি আমাদের সামনে উপস্থিত হয়যার কাপড় ছিল ধবধবে সাদাচুল ছিল ভীষণ কালোতার মাঝে ভ্রমণের কোন লক্ষণ পরিলক্ষিত হচ্ছিল না। আমাদের মধ্যে কেউ তাকে চিনতে পারেনি। সে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকটে গিয়ে বসেনিজের হাঁটু তার হাঁটুর সঙ্গে মিলিয়ে নিজের হাত তার উরুতে রেখে বললেন: হে মুহাম্মাদআমাকে ইসলাম সম্পর্কে বলুন
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন: ইসলাম হচ্ছে এই- তুমি সাক্ষ্য দাও যেআল্লাহ ছাড়া আর কোন সত্য ইলাহ্ নেই এবং মুহাম্মাদ (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আল্লাহর রাসূলসালাত প্রতিষ্ঠা করযাকাত আদায় কররামাদানে সওম সাধনা কর এবং যদি সামর্থ থাকে তবে (আল্লাহর) ঘরের হজ্জ কর।
তিনি (লোকটি) বললেন: আপনি ঠিক বলেছেন। আমরা বিস্মিত হলামসে নিজে তার নিকট জিজ্ঞাসা করেছে আবার নিজেই তার জবাবকে ঠিক বলে ঘোষণা করছে। এরপর বলল: আচ্ছাআমাকে ঈমান সম্পর্কে বলুন
তিনি (রাসূল) বললেন: তা হচ্ছে এই- আল্লাহর ফিরিশতাগণতাঁর কিতাবসমূহতাঁর রাসূলগণ ও আখেরাতর উপর ঈমান আনা এবং তাকদীরের ভাল-মন্দের উপর ঈমান আনা
সে (আগন্তুক) বলল: আপনি ঠিক বলেছেন। তারপর বলল: আমাকে ইহসান সম্পর্কে বলুন
তিনি বলেন: তা হচ্ছে এই- তুমি এমনভাবে আল্লাহর ইবাদাত কর যেন তুমি আল্লাহকে দেখতে পাচ্ছআর তুমি যদি তাঁকে দেখতে না ও পাও তবে তিনি তোমাকে দেখছেন
সে (আগন্তুক) বলল: আমাকে কেয়ামত সম্পর্কে বলুন। তিনি (রাসূল) বললেন: যাকে জিজ্ঞাসা করা হচ্ছে সে জিজ্ঞাসাকারী অপেক্ষা বেশী কিছু জানে না। সে (আগন্তুক) বলল: আচ্ছাতার লক্ষণ সম্পর্কে বলুন
তিনি (রাসূল) বললেন: তা হচ্ছে এই- দাসী নিজের মালিককে জন্ম দেবেসম্পদ ও বস্ত্রহীন রাখালগণ উঁচু উঁচু প্রাসাদ তৈরি করে দম্ভ করবে
তারপর ঐ ব্যক্তি চলে যায়আর আমি আরো কিছুক্ষণ বসে থাকি। তখন তিনি (রাসূল) আমাকে বললেন: হে উমরপ্রশ্নকারী কে ছিলেনতুমি কি জানআমি বললাম: আল্লাহ ও তাঁর রাসূল অধিক ভাল জানেন। তিনি বললেন: তিনি হলেন জিবরীল। তোমাদেরকে তোমাদের দ্বীন শিক্ষা দিতে তোমাদের কাছে এসেছিলেন। [সহীহ মুসলিম]
  

be Organized by Holy Islam 

O.H.I