السلام عليكم
দৈনন্দিন পথনির্দেশিকা
রামাদান ম্যানুয়েল-১৭: জান্নাতে রোযার একটি দরজা আছে
সাহাল বিন সাদ থেকে বর্ণিত, রাসূল সা. বলেন :
في الجنَّةِ ثَمَانِيَةُ أبْوَابٍ فيهَا بَابٌ يُسَمَّي الرَّيَّانُ لا يَدْخُلُهُ إِلاّ الصَّائِمُونَ رَوَاهُ الشَّيخَان
জান্নাতে আটটি দরজা আছে তার মধ্যে একটি দরজার নাম “রাইয়ান” যে দরজা দিয়ে রোজাদার ছাড়া আর কেউ প্রবেশ করবে না।
বুখারীর বর্ণনার ভাষা এমন:
إِنَّ في الجَنَّةِ بَاباً يُقَالُ لهُ الرَّيَّانُ يَدخُلُ منهُ الصَّائِمونَ يَوْمَ القِيامَةِ لا يَدخُلُ منْهُ أحَدٌ غَيرُهُمْ، يقَالُ: أَيْنَ الصَّائِمونَ؟ فَيَقُومُونَ، لا يَدخُلُ منْهُ أَحَدٌ غَيرُهُم، فَإِذا دَخَلُوا أُغْلِقَ فَلَم يَدخُلْ مِنْهُ أَحَدٌগ্ধ
জান্নাতে একটি দরজা আছে যাকে রাইয়ান বলা হয় কেয়ামত দিবসে সেখান দিয়ে রোজাদার প্রবেশ করবে, রোজাদার ছাড়া আর কেউ সেখান দিয়ে প্রবেশ করবে না। বলা হবে: রোজাদার কোথায়? তখন তারা দাঁড়াবে, তারা ছাড়া আর কেউ সেখান দিয়ে প্রবেশ করবে না, যখন প্রবেশ করবে দরজা বন্দ করে দেয়া হবে আর কেউ সেখানে প্রবেশ করবে না।
তিরমিজির বর্ণনার ভাষা এমন:
إِنَّ في الجنَّةِ لبَاباً يُدعَى الرَّيَّانُ، يُدعَى لهُ الصَّائِمُونَ، فَمَنْ كَانَ مِنَ الصَّائِمِينَ دَخَلَهُ، وَمَنْ دَخَلَهُ لم يَظْمَأْ أَبَداً
জান্নাতে একটি দরজা আছে যাকে রাইয়ান বলা হয়, সেখানে রোজাদারকে ডাকা হবে, যিনি রোজাদার হবেন তিনি প্রবেশ করবেন, আর যে সেখানে প্রবেশ করবে সে কখনও পিপাষার্ত হবে না।
আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূল সা. বলেন :
مَنْ أَنفَقَ زَوجَينِ في سَبيلِ الله نُودِيَ مِنْ أبْوابِ الجَنَّةِ: يا عَبدَالله: هَذَا خَيْرٌ، فَمَنْ كَانَ مِنْ أَهْلِ الصَّلاةِ دُعِيَ مِنْ بَابِ الصَّلاةِ، ومَنْ كَانَ منْ أهْلِ الجِهادِ دُعِيَ من بَابِ الجِهادِ، ومَنْ كَانَ مِنْ أهْلِ الصِّيَامِ دُعِيَ من بَابِ الرَّيَّانِ، ومَنْ كَانَ مِنْ أَهْلِ الصَّدَقَةِ دُعِيَ من بَابِ الصَّدَقَةِ، فقَالَ أَبو بَكْرঃ : بِأَبي وأُمِّي يا رَسُولَ الله، مَا عَلى مَن دُعِيَ من تلكَ الأَبوَابِ مِنْ ضَرُورَةٍ فَهَلْ يُدْعَى أَحَدٌ من تِلكَ الأَبوَابِ كلِّها؟ قَالَ: نَعَم، وأَرجُو أن تَكُونَ مِنهُمগ্ধ رواه الشيخان
আবু হুরায়রা রা. রাসূলুল্লাহ সালল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন: যে ব্যক্তি আল্লাহর রাস্তায় দুটি জিনিস খরচ করবে তাকে জান্নাতের দরজাসমূহ দিয়ে ডাকা হবে এই বলে: হে আব্দুল্লাহ ইহা তোমার জন্য কল্যাণকর। যে নামাযী হবে তাকে নামাযের দরজা দিয়ে ডাকা হবে এবং যে জিহাদকারী হবে তাকে জিহাদের দরজা দিয়ে ডাকা হবে আর যে রোজাদার হবে তাকে রাইয়ান দরজা দিয়ে ডাকা হবে আর যে দানশীল হবে তাকে দানের দরজা দিয়ে ডাকা হবে। আবু বকর রা. বললেন, হে আল্লাহর রাসূল আমার মাথা পিতা আপনার প্রতি উৎসর্গিত হোক তার কি হবে যাকে অবশ্যই এই সমস্ত দরজাসমূহ থেকে এক যোগে ডাকা হবে? কাকেও কি এই সমস্ত দরজা থেকে এক যগে ডাকা হবে? আল্লাহর রাসূল বললেন: হ্যাঁ আর আমার প্রত্যাশা তুমি তাদের মধ্য থেকে হবে।
বুখারী ও মুসলিমের শব্দ এমন এসেছে:
دُعَاه خَزَنَةُ الجَنَّةِ، كُلُّ خَزَنَةِ بَابٍ أَيْ: فُلْ، هَلُمَّ
জান্নাতের প্রহরীরা এইভাবে ডাকবে প্রত্যেক দরজার প্রহরী বলবে: আস।
ইমাম আহমাদ এমনভাবে বর্ণনা করেছেন:
لِكلِّ أَهْلِ عَمَلٍ بَابٌ مِنْ أَبْوَابِ الجَنَّةِ يُدْعَونَ بذَلكَ العَمَل، ولأَهْلِ الصَّيامِ بَابٌ يُدْعَوْنَ مِنهُ، يُقَالُ لَهُ: الرَّيَّان، فقَالَ أَبو بَكر: يا رَسُولَ الله، هَلْ أَحَدٌ يُدْعَى مِنْ تِلْكَ الأَبْوابِ كُلِّها؟ قَالَ: نَعَم، وأَرجُو أنْ تَكُونَ مِنهُم يا أَبا بَكْر
প্রত্যেক আমলকারীর জন্য জান্নাতের একটি একটি দরজা থাকবে যে দরজা থেকে তার আমল অনুযায়ী ডাকা হবে, রোজাদারের জন্য দরজা থাকবে সেখান থেকে তাকে ডাকা হবে যে দরজার নাম হল রাইয়ান। আবু বকর রা. বললেন, হে আল্লাহর রাসূল কাউকে কি সমস্ত দরজা থেকে ডাকা হবে? তিনি বললেন: হ্যাঁ আর আমার আসা তুমি তাদের মধ্য থেকে হবে হে আব বকর?
আবু বকর রা. যখন প্রশ্ন করলেন নবী সা. কে তার উদ্দেশ্য ছিল যাকে জান্নাতের কোন একটি দরজা দিয়ে ডাকা হবে তাই তার জন্য যথেষ্ট হবে সব দরজা দিয়ে না ডাকলেও তার কোন অসুবিদধা হবে না। কেননা, জান্নাকে প্রবেশের উদ্দেশ্যত তার হাসিল হয়ে যাবে এতত সত্যেও কি কাওকে সমস্ত দরজা দিয়ে ডাকা হবে? নবী সা. তার উত্তরে হ্যাঁ বললেন।
হাদিসগুলো থেকে যা শিখলাম :
প্রথমতঃ রোজার মর্যাদার কারণেই জান্নাতের আটটি দরজা থেকে একটি রোজাদারের জন্য নির্দিষ্ট করা হয়েছে।
দ্বিতীয়তঃ রাইয়ান জান্নাতের একটি দরজার নাম যা الرِّيِّ শব্দ থেকে নেয়া হয়েছে যার অর্থ পান করান রোজাদার নিজেকে পান করা থেকে বিরত রেখেছিল যার প্রয়োজন মানুষের সব চেয়ে বেশি, সে কাজের প্রতিদানও পরকালে পান করানোর মাধ্যমে হওয়াই যতার্থ যে পানের মাধ্যমে কখনও পিপাশিত হবে না।
তৃতীয়তঃ হাদীসে যে সমস্ত ইবাদতের জান্নাতে দরজার কথা উল্লেখ হয়েছে নামায, জিহাদ, রোজা, দান প্রত্যেকটি দরজা নির্দিষ্ট থাকবে এই সমস্ত ইবাদতকারীদের জন্য। এখানে উদ্দেশ্য হল অধিক হারে যে যে ইবাদতটি করবে তার জন্য সেই দরজাটি নির্দিষ্ট হবে।
চতুর্থতঃ জান্নাতের দরজাগুলির জন্য প্রহরি ফেরেশতা আছে প্রত্যেক আমলকারীকে নির্দিষ্ট ফেরেশতা নির্দিষ্ট দরজা দিয়ে ডাকবে, ইহা এই প্রমাণ বহন করে যে, ফেরেশতারা আদম সন্তানের নেক আমলকে পছন্দ করে এবং তাতে খুশি হয়।
পঞ্চমতঃ আবু বকর রা. মর্যাদা তাকে সমস্ত দরজা দিয়ে ডাকা হবে কেননা তিনি সমস্ত আমলগুলি করেন আর রাসূলের আশা প্রকাশوَأَرجُو أنْ تَكُونَ مِنهُم এটা অবশ্যই ঘটবে ইবনে আব্বাস রা. এর হাদীসে এসেছে যা দ্বারা বুঝা যায় যে , আবু বকর রা. কে জান্নাতের প্রত্যেক দরজা ও রুম থেকে ডাকা হবে।
ষষ্টতঃ হাদীসে এ কথারও ইঙ্গিত রয়েছে যে ঐ সমস্ত দরজা দিয়ে অল্প সংখাক লোকদেরকে ডাকা হবে।
সপ্তমতঃ হাদীসে এ কথারও ইঙ্গিত রয়েছে যে সমস্ত আমলের কারণে ডাকা হবে তা নফল আমল, ফরজ আমল নয়। কেননা ফরজ আমলকারীর সংখা তো অনেক পাওয়া যাবে কিন্তু ফরজ আদায়ের পর নফলও গুরুত্ব সহকারে আদায় করবে এমন লোকের সংখা কম হবে।
অষ্টমতঃ মানুষের সামনে তার প্রসংশা বৈধ যদি সে এর দ্বারা ধোকায় না পড়ে।
নবমতঃ যে ব্যক্তি এই সমস্ত ভাল কাজগুলি সব সময় করবে জান্নাতের দরজাগুলি তাকে আহবান করা এটা তার প্রতি সম্মান প্রদর্শন, কিন্তু সে জান্নাতের একটি দরজা দিয়েই প্রবেশ করবে।
দশমতঃ ভাল কাজ একজন মানুষের জন্য সবগুলি করা সাধারণত কঠিন। যদি কেউ কিছু করতে পারে তবে কিছু বাদও পড়ে যায়। খুব অল্প সংখক লোক সমস্ত কাজ করতে পারে আবু বকর রা. সেই অল্পদের মধ্য থেকে।
একাদশতমতঃ যে ব্যক্তি যে কাজে বেশি প্রসিদ্ধি লাভ করেছে তাকে সেই কাজের সাথে সম্পৃক্ত করা হয়েছে যেমন রাসূল সা. এর কথা فَمَن كَانَ مِنْ أَهلِ الصَّلاةِ অর্থাৎ যে অধিক পরিমানে নামায পড়বে তাকে নামাযের সাথেই সম্পৃক্ত করা হবে। তা ছাড়াতো সমস্ত মুসলমানই কম বেশি নামাযী।
· বুখারী ৩০৮৪ মুসলিম ১১৫৫
· বুখারী ১৭৯৮।
· তিরমিজি ৭৬৫।
· বুখারী ১৭৯৮ মুসলিম ১০২৭ ।
· সহিহ ইবনে হাব্বান ৬৭৬৭।
· ফতহুল বারী ২৮/৭।
· পূর্ব সূত্র ২৯-২৮/৭
শিশুদের জন্য সিয়াম সম্পর্কিত কার্টুন দেখুনঃ
সাওম/রোজা সংক্রান্ত বই | ||
ক্রম
|
বই
|
লেখক
|
১
|
আব্দুর রহমান বিন আব্দুল আযীয আস-সুদাইস
| |
২
|
সিয়াম রাসুলুল্লাহর(স) রোযা
|
ডাঃ জাকির নায়েক
|
৩
|
শায়খ মুহাম্মদ সালেহ আল মুনাজ্জিদ
| |
৪
|
সংকলনঃ মুহাম্মদ নাসীল শাহরুখ
| |
৫
|
আলী হাসান তৈয়ব
| |
৬
|
অধ্যাপক মোঃ নুরুল ইসলাম
| |
৭
|
ফয়সাল বিন আলী আল বা'দানী
| |
৮
|
আব্দুল্লাহ শহীদ আব্দুর রহমান
| |
৯
|
শাইখ আব্দুল্লাহ বিন আব্দুর রহমান আল-জিবরীন
| |
১০
|
আখতারুজ্জামান মুহাম্মদ সুলাইমান
| |
১১
|
জাকেরুল্লাহ আবুল খায়ের
| |
১২
|
সংকলনঃ আবুল কালাম আজাদ
|
O.H.I
For More Visit:
বই পড়ুনঃ