দৈনন্দিন পথনির্দেশিকা
রামাদান ম্যানুয়েল-১২: জামাতের সঙ্গে তারাবির নামাজ পড়ার ফজিলত
সাহাবি আবু জর রা. বলেন :
صُمْنَا
معَ رَسُولِ الله ﷺ رَمَضَانَ فَلَمْ يَقُمْ بنا شَيءٌ مِنَ الشَّهرِ حَتَّى
بَقيَ سَبعٌ فَقَام بنا حتَّى ذَهَبَ ثُلُثُ اللَّيلِ، فلمَّا كَانتْ السَّادسَةُ
لم يَقُم بِنَا، فلمَّا كانت الخَامِسَةُ قام بِنَا حتَّى ذَهَبَ
شطْرُ اللَّيلِ فَقُلتُ: يا رَسُولَ الله، لو
نَفَلْتَنَا قِيَامَ هذهِ اللَّيلةِ، قَالَ: فَقَالَ: إنَّ الرَّجُلَ إذا صَلَّى
مَعَ الإِمَامِ حَتَّى يَنصَرِفَ حُسِبَ له قِيَامُ لَيلَةٍ، قالَ: فلمَّا
كانَت الرَّابِعَةُ لم يَقُمْ، فلمَّا كانت الثَّالثَةُ جَمَعَ أَهْلَهُ
ونِسَاءَهُ والنَّاسَ فقَامَ بنَا حتَّى خَشِينَا أن يَفُوتَنَا الفَلاحُ. قَالَ:
قُلتُ: مَا الفَلاحُ؟ قَالَ: السَّحُورُ، ثمَّ
لم يَقُم بنَا بَقِيَّة الشَّهر» رواه أبوداود (১৩৭৫) والترمذي وقال: حسن صحيح (৮০৬) والنسائي (৮৩/৩) وابن ماجه (১৩২৭) وأحمد (১৬৩/৫) وصححه ابن خزيمة (২২০৫) وابن حبان (২৫৪৭).
আমরা রাসূল সা. এর সঙ্গে রমজানের রোজা
পালন করলাম। মাসের কখনো তিনি আমাদের নিয়ে তারাবির নামাজ পড়লেন না। অবশেষে যখন মাত্র
সাত দিন বাকি রইল, তিনি তখন আমাদের নিয়ে তারাবির নামাজ পড়লেন। এ
নামাজে রাতের এক তৃতীয়াংশ অতিবাহিত হয়ে গেল। ষষ্ঠ দিন তিনি আমাদের সঙ্গে নামাজ পড়লেন
না। যখন পাঁচ দিন বাকি রইল, তখন তিনি আমাদের নিয়ে নামাজ পড়লেন, যাতে রাতের অর্ধেক
অতিবাহিত হয়ে গেল। অতঃপর আমি
বললাম : হে আল্লাহর রাসূল, যদি রাতের বাকি অংশও আমাদের নিয়ে নামাজ পড়তেন! তিনি বলেন : রাসূল সা. বললেন
: যে ব্যক্তি ইমামের চলে যাওয়ার আগ পর্যন্ত ইমামের সঙ্গে নামাজ পড়ল,
তার জন্য পূর্ণ রাতের সওয়াব গণ্য করা হবে। তিনি বলেন : যখন চতুর্থ রাত হল, তিনি আমাদের
নিয়ে নামাজ পড়লেন না। যখন তৃতীয় রাত অপনীত হল, তখন রাসূল সা.
নিজ পরিবার ও নিজ স্ত্রীদের এবং সবাইকে জমা করে নামাজ পড়লেন। এক পর্যায়ে আমাদের আশঙ্কা হল, হয়তো ‘ফালাহ’
ছুটে যাবে। সে বলল : আমি জিজ্ঞাসা করলাম : ‘ফালাহ’ কি? তিনি বললেন
: সেহরি। অতঃপর মাসের অবশিষ্ট দিনগুলোতে তিনি আমাদের নিয়ে আর নামাজ পড়েননি।
হাদিস
থেকে যা শিখলাম
১. এ হাদিস দ্বারা প্রমাণিত হয় তারাবির নামাজ
সুন্নত। রাসূল সা. এ নামাজ পড়েছেন, অতঃপর ত্যাগ করেছেন মুসলমানের
ওপর ফরজ হয়ে যেতে পারে এ আশঙ্কায়।
২. মসজিদের ভেতর মুসলমানের জামাতের সঙ্গে নারীদেরও তারাবির
নামাজ পড়ার বৈধতা প্রমাণিত হয়। কারণ, রাসূল সা. নিজ পরিবার, স্ত্রী ও অন্যান্য লোকদের জমা করেছেন এবং সবাইকে নিয়ে নামাজ পড়েছেন।
৩. ইমামের চলে যাওয়ার আগ পর্যন্ত যে ব্যক্তি
ইমামের সঙ্গে নামাজ পড়বে, সে
পূর্ণ রাত নামাজ পড়েছে বলে গণ্য করা
হবে। সুতরাং প্রতিটি মুসলমানের উচিত এ মহৎ কল্যাণের ব্যাপারে অলসতা না করা। রমজানের
প্রত্যেক রাতে অন্যান্য মুসলমানদের সাথে তারাবির শেষ পর্যন্ত থাকা। ইমাম আহমদ রহ. কে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল : রমজানে
অন্যান্য লোকদের সংগে জামাতে নামাজ পড়া আপনার
পছন্দ, না একাকী নামাজ
পড়া? তিনি বললেন : জামাতের সঙ্গে নামাজ পড়া এবং সুন্নত জীবিত
করা। তিনি আরো বলেন : আমার পছন্দ হচ্ছে ইমামের সঙ্গে নামাজ পড়া এবং সঙ্গে বেতেরও পড়া।
৪. তারাবির নামাজের ক্ষেত্রে
সুন্নত হচ্ছে রাতের প্রথম ভাগে ইমামের সঙ্গে নামাজ পড়া। যেভাবে রাসূল সা. এবং তার সাহাবায়ে
কেরাম পড়েছেন। ইমাম আহমদ রহ. কে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল : তারাবির নামাজ শেষরাতে পড়ার
জন্য কি অপেক্ষা করব? তিনি বললেন : না, মুসলমানদের সুন্নত
আমার নিকট অধিক প্রিয়। শায়খ আব্দুল্লাহ বিন
বাজ রহ. কে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল : যদি সবাই মিলে শেষ রাতে বেতর পড়ার জন্য একমত হয়?
তিনি বললেন : সবাই মিলে প্রথম রাতে নামাজ পড়াই অধিক উত্তম।
৫. যে ব্যক্তি নিজের মধ্যে আগ্রহ ও ইবাদত করার
স্পৃহা লক্ষ্য করবে, তার উচিত প্রথম রাতে মুসলমানদের সঙ্গে
নামাজ পড়া এবং শেষ রাতে যত ইচ্ছা নিজে নিজে নামাজ পড়া। তাহলে তার মধ্যে তুটি কল্যাণ
একত্র হবে : ইমামের সঙ্গে শেষ পর্যন্ত নামাজ
পড়ার কল্যাণ এবং শেষ রাতে নামাজ পড়ার কল্যাণ।
তথ্যসুত্রঃ
·
আবু দাউদ
: হাদিস নং ১৩৭৫, নাসায়ি : ৩/৮৩, ইবনে মাজাহ : ১৩২৭, আহমদ : ৫/১৬৩, সহিহ ইবনে খুজাইমা : ২২০৫, সহিহ ইবনে হিব্বান
: ২৫৪৭
·
তুহফাতুল
আহওয়াজি : ৩/৪৪৮, আল-মুগনি : ১/৪৫৭
·
আল-মুগনি
: ১/৪৫৭
বিস্তারিত পড়ুনঃ
আল্লামা নাসিরুদ্দিন আলবানী
|
Collected from Islamhouse.com
O.H.I
For More Visit:
বই পড়ুনঃ