Saturday, March 7, 2009

রাসুলের বিদায় হজ্জের ভাষণ

السلام عليكم

দৈনন্দিন পথনির্দেশিকা

রাসুলের বিদায় হজ্জের ভাষণ


বিদায় হজ্জে রাসুলুল্লাহ (সা.) আরাফাতে অবস্থানকালে প্রায় ১,২৪,০০০ মতান্তরে ১,৪৪,০০০ লোকের বিশাল জন সমুদ্রের কাছে উদ্দেশ্যে এক ঐতিহাসিক ভাষণ দেন । তিনি বলেন,

হে লোক সকল,আমার কথা শোনো, আমি জানি না, এবারের পর তোমাদের সাথে এই জায়গায় আর মিলিত হতে পারব কিনা।

আমার পর আর কোন নবী আসবে না। তোমাদের পরও কোন উন্মত জন্ম নেবে না। সুতরাং মনোযোগ দিয়ে শোন এবং আপন প্রতিপালকের দাসত্ব কর। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করবে। রমজানের রোযা রাখবে। সানন্দ চিত্তে নিজের ধন-সম্পদের যাকাত দিবে। নিজ পরওয়ারদেগারের ঘরে হজ্জ করবে। আপন নেতা ও দায়িত্বশীলদের আনুগত্য কর, যাতে তোমরা আল্লাহর জান্নাতে যেতে পারো।

তোমাদের রক্ত এবং ধন- সম্পদ পরস্পরের জন্যে আজকের দিন, বর্তমান মাস এবং বর্তমান শহরের মত নিষিদ্ধ।

শোনো, জাহেলিয়াতের সময়ের সবকিছু আমার পদতলে পিষ্ট করা হয়েছে। জাহেলিয়াতের খুনও খতম করা হয়েছে। সর্বপ্রথম আমি আমের বিন রবীয়ার খুনের দাবী রহিত করলাম। জাহিলিয়াত যুগের সমস্ত পদ পদবী ও সন্মান বাতিল করা হল। কেবল কাবা শরীফের তত্ত্বাবধায়কের পদ ও হাজীদের পানি সরবারহের পদ- এই দুটি পদ বহাল থাকবে।

জাহিলিয়াত যুগের সমস্ত সুদগুলো বাতিল করা হল। সর্বপ্রথম আমি আমার চাচা আব্বাসের সুদ রহিত করলাম।

হে জনতা! তোমাদের নারীদেরকে তোমাদের ওপর কিছু অধিকার দেওয়া হয়েছে। তোমাদেরও তাদের কাছে কিছু অধিকার প্রাপ্য রয়েছে। তোমাদের স্বামীদের শয়নকক্ষে তোমরা ছাড়া আর কাউকে আসতে না দেওয়া তোমাদের কর্তব্য। কোন নির্লজ্জ ও অশ্লীন কাজ করা স্ত্রীদের উচিত নয়।

ওহে লোক সকল! আমি নারীদের সম্পর্কে তোমাদের হুশিয়ার করে দিচ্ছি। তোমরা যখন তাদের উপর নির্মম ব্যবহার কর তখন আল্লাহর শাস্তি সম্পর্কে নির্ভীক হয়ো না। তোমরা অবশ্যই তাদেরকে আল্লাহর জমীনে গ্রহণ করেছ এবং তারই কালেমার মাধ্যমে তাদের সাথে তোমাদের দাম্পত্য সম্পর্ক হয়েছে। জেনে রেখো, নারীদের পুরুষদের অধীন করা হয়েছে। তাদের উপর যেমন তোমাদের অধিকার আছে তেমন তোমাদের উপরও তাদের অধিকার আছে সুতরাং তাদের কল্যাণ সাধনের ব্যাপারে তোমরা আমার উপদেশ গ্রহণ করো।

তোমাদের সাথে আমার সম্পর্কের ব্যাপারে তোমাদের জিজ্ঞাসা করা হবে। তোমরা তখন কি বলবে? সাহাবারা বললেন, আমরা সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আপনি আপনার দাওয়াত পৌছে দিয়েছেন। একথা শুনে রাসুলুল্লাহ (সা) শাহাদাত আঙ্গুল আকাশের দিকে তুলে এরপর লোকদের দিকে ঝুঁকিয়ে তিনবার বললেন, ইয়া রাব্বুল আলামীন, তুমি সাক্ষী থেকো।

রাসুলুল্লাহ (সা) -এর বাণীসমুহ রবিয়া ইবনে উমাইয়া ইবনে খালফ উচ্চকন্ঠে মানুষের কাছে পৌছে দিচ্ছিলেন। রাসুলুল্লাহ (সা) ভাষণ শেষ করার পর আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনের এই আয়াত নাযিল করলেন।

আজ আমি তোমাদের জন্যে তোমাদের দ্বীনকে পূর্নাঙ্গ করে দিলাম, তোমাদের প্রতি আমার অবদান সম্পূর্ণ করে দিলাম এবং ইসলামকে তোমাদের জন্যে দ্বীন হিসেবে পছন্দ করলাম (সুরা মায়েদাহ-৩)

হযরত উমার (রা) এই আয়াত শুনে কাঁদতে শুরু করেন। তাকে জিজ্ঞাসা করা হলো, আপনি কাঁদছেন কেন? তিনি বলেন, কাঁদছি এ জন্যে যে, পূর্ণতার পর তো শুধু অপূর্ণতাই বাকী থাকে।


মিনায় অবস্থান কালে ভাষণ


নিশ্চয়ই আবর্তনের পথ ধরে মহাকাল আজ তার সেই প্রারম্ভিক বিন্দুতে প্রত্যাবর্তন করেছে, যেখানে সে আল্লাহ কর্তৃক আকাশ ও পৃথিবীর সৃষ্টির দিনে ছিল। অর্থাৎ আল্লাহর কাছে মাস সুনিশ্চিতভাবে বারোটাই। যখন আল্লাহ আকাশ ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন তখন থেকেই মাসের সংখ্যা এভাবেই লেখা হয়েছে। এগুলোর মধ্যে চার মাস নিষিদ্ধ। তিনটি মাস ধারাবাহিক- জিলকদ, জিলহজ্জ ও মুহাররম। আর এক্টির অবস্থা একাকী অর্থাৎ রজব মাস, যা জমাদিউস সানী ও শাবানের মাঝখানে অবস্থিত।

রাসুলুল্লাহ (সা) একথাও বললেন যে, এটি কোন মাস? আমরা বললাম, আল্লাহ ও তার রাসুলই ভালো জানেন। রাসুলুল্লাহ (সা) (সা) নীরব থাকলেন। আমরা বুঝলাম যে, রাসুলুল্লাহ (সা) এ মাসের অন্য কোন নাম রাখবেন। কিন্তু রাসুলুল্লাহ (সা) বললেন, এটি কি জিলহজ্জ মাস নয়? আমরা বললাম, কেন নয়?

তিনি বললেন, এটা কোন শহর? আমরা বললাম, আল্লাহ ও তার রাসুলই ভালো জানেন। রাসুলুল্লাহ (সা) (সা) নীরব থাকলেন। আমরা বুঝলাম যে, রাসুলুল্লাহ (সা) এ শহরের অন্য কোন নাম রাখবেন। কিন্তু রাসুলুল্লাহ (সা) বললেন, এটি কি মক্কা শহর নয়? আমরা বললাম, কেন নয়?

রাসুলুল্লাহ (সা) বললেন, এই দিনের পরিচয় কি? আমরা বললাম, আল্লাহ ও তার রাসুলই ভালো জানেন। রাসুলুল্লাহ (সা) নীরব থাকলেন। আমরা বুঝলাম যে, রাসুলুল্লাহ (সা) এই দিনের অন্য কোন নাম রাখবেন। কিন্তু রাসুলুল্লাহ (সা) বললেন, এটি কি ইয়াওমুন নহর অর্থাৎ কোরবানীর দিন নয়? আমরা বললাম, কেন নয়?

আচ্ছা, তবে শোন, তোমাদের রক্ত, তোমাদের অর্থ-সম্পদ এবং তোমাদের ইজ্জত-আবরু পরস্পরের জন্য এরুপ নিষিদ্ধ ও সন্মানীয়, যেমন তোমাদের এ শহর, এ মাস ও আজকের দিন তোমাদের জন্য সন্মানীয়। তোমরা তোমাদের পরওয়ারদিগারের সাথে শীঘ্রই মিলিত হবে এবং তোমাদেরকে তোমাদের আমল সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হবে।কাজেই লক্ষ্য রেখ, আমার পরে তোমরা পথভ্রষ্ট হয়ো না।

এমন পথভ্রষ্ট হয়ো না যে, একে অন্যের ঘাড় মটকাতে শুরু করবে। বলো, আমি কি আহবান পৌছিয়েছি? সাহাবারা বললেন, হ্যা।

রাসুলুল্লাহ (সা) বললেন, আল্লাহ তুমি সাক্ষী থেকো। যে ব্যক্তি এখানে উপস্থিত রয়েছে তারা অনুপস্থিতদের কাছে আমার বাণী পৌছিয়ে দিবে। কেননা উপস্থিত অনেকের চেয়ে অনেক অনুপস্থিত ব্যক্তি আমার এ বক্তব্যের অধিক গুরুত্ব দিবে।

(তথ্যসুত্র- আর রাহীকুল মাখতুম: আল্লামা ছফিউর রহমান মোবারকপুরী, মুহসিনে ইনসানীয়াত (মানবতার বন্ধু রাসুলুল্লাহ (সা))-নঈম সিদ্দিকী এবং রাসুলুল্লাহ (সা) বিদায়ী ভাষণ: খন্দকার আবুল খায়ের)

For English click below:

· The Prophet Muhammad's (PBUH) Last Sermon

Bangla reading problem visit:

http://unicodehelpcenter.blogspot.com/


be Organized by Holy Islam
O.H.I
For More Visit:

http://ohioftruth.blogspot.com/

http://www.youtube.com/user/TrueOHI

http://www.somewhereinblog.net/blog/ohioftruth